হবিগঞ্জ : ২৭ জানুয়ারি আজ। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ১২ বছর। দফায় দফায় তদন্ত আর নানা আইনি জটিলতার কারণে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি। প্রায় দুই বছর আগে হত্যা মামলাটির বিচার শুরু হলেও তা চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। দুই বছরে সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে মাত্র ৪৩ জনের। যেখানে মোট সাক্ষী রয়েছেন ১৭১ জন।
সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে একই ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে মাত্র। এ অবস্থায় নিহতদের স্বজন ও আহতদের মাঝে সংশয় কাটছে না।
বিচার নিয়ে হতাশ বা শঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মামলা দু’টির বাদী বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মো. আব্দুল মজিদ খান এমপি বলেন, তদন্তে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়েছে। ফলে মানুষের মনে তখন কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু সবকিছুর শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দিয়ে মামলাটি বিচারের পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন।
মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষিদের কেউ কেউ এখনও বাকি রয়েছেন। ফলে দেরি হওয়ার জন্য নিহতদের পরিবারগুলোর মাঝে কিছু শঙ্কা থাকতেই পারে। তবে মামলার বাদী হিসেবে তার বিশ্বাস এ জঘণ্য হত্যাকাণ্ডের বিচার হবেই। কেউ দায়মুক্তি পাবে না।
এ ঘটনায় আহত জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাড. মো. আবু জাহির জানান, আইন নিজস্ব গতিতেই চলছে। তবে কখনও সাক্ষী হাজির হয় না। আবার কখনও সাক্ষী গেলে আসামি হাজির না থাকায় সাক্ষ্য নিতে পারেন না বিচারক। এ পরিস্থিতির কারণে বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। তিনি আশা করেন দ্রুততম সময়ের মাঝেই ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হবে।
নিহত আব্দুর রহিম, সিদ্দিক আলী ও আবুল হোসেনের স্বজনরা জানান, তারা শুধু শুনেই আসছেন বিচার হবে। কিন্তু কেবল বিলম্বিতই হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার। তারা ইতোমধ্যে সাক্ষ্যও দিয়েছেন। এরপরও বিচারটি বিলম্বিত হওয়ায় তারা সংশয় প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পূণর্মিলনী উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ ৫ জন। হামলায় আহত হন অন্তত আরও ৪৩ জন। এ ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। উভয় মামলায় একাধিকবার তদন্ত হয়।
সর্বশেষ তদন্তে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জের মেয়র জি কে গউছসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়। এর মাঝে আরিফুল হক চৌধুরী ও জি কে গউছসহ ১০ জন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে, ৮ জন পলাতক ও ১৪ জন কারাগারে আটক আছেন। -জাগো নিউজ।
২৭ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম