হবিগঞ্জ থেকে : হবিগঞ্জে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার কারণেই খুন হয়েছেন নিজাম উদ্দিন নামে দোকান কর্মচারী। ব্ল্যাকমেইল করে নগদ অর্থ আদায় ও প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ে করে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। মানসিক চাপ নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে নিজামকে হত্যা করেন এ দম্পতি ও সহযোগীরা।
শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ। পুলিশ সুপার জানান, গত ১১ মার্চ রাতে শ্যামলী এলাকার একটি ঝোপের ভিতর থেকে দোকান কর্মচারী নিজামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৫ মার্চ নিহত নিজাম উদ্দিনের বাবা ইমাম উদ্দিন বাদী হয়ে আমেরিকা প্রবাসী স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় ১৭ মার্চ দেশত্যাগের সময় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আমেরিকা প্রবাসী হানিফ উল্লাহ (৩৫) ও তার স্ত্রী রোমানা আক্তারকে (৩০) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে শুক্রবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-১ আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ সুপার জানান, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে জানা যায় প্রায় চার বছর আগে স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ আমেরিকা চলে যান হানিফ উল্লাহ। ২০২০ সালের নভেম্বরে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে দেশে আসেন। দীর্ঘদিন তাদের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার সুবাদে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুযোগে নিজাম উদ্দিন আমেরিকা প্রবাসী হানিফ উল্লাহর শোবার ঘরে ও বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে রেখে প্রবাসীর স্ত্রী রোমানার গোসলের ভিডিও ও স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে। পরে এসব ভিডিও ও ছবি রোমানাকে দেখিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়।
তিনি আরও জানান, ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকাও হাতিয়ে নেন। এক পর্যায়ে নিজাম উদ্দিন প্রবাসীর স্ত্রী রোমানা আক্তারকে তার স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রোমানা। বিষয়টি তিনি তার স্বামীকে জানালে হানিফ উল্লাহ ক্ষুব্ধ হয়ে নিজাম উদ্দিনকে খুনের পরিকল্পনা করেন। গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় নিজাম উদ্দিনকে ফোন করে শ্যামলী এলাকার একটি গ্যারেজে ডেকে আনেন রোমানা। সেখানে হানিফ উল্লাসহ অন্য আসামিরা তাকে হত্যা করে মরদেহ একটি ঝোপে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।