হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক নারীকে ধর্ষণ করেছে তিন যুবক। এ ঘটনায় দুই যুবককে ধরে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল সোমবার সদর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। পরে রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় তারা।
আটককৃতরা হলো- জেলার চুনারুঘাট উপজেলার ঝিকুয়া গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া ও কাছম আলীর ছেলে সায়মন আহমেদ শামীম।
ভুক্তভোগী নারী জেলার বানিয়াচং উপজেলার গুনই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সিলেটে একটি কম্পানিতে চাকরি করেন। লকডাউনে ছুটি থাকায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।
হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মাসুক আলী মঙ্গলবার দুপুরে জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেট থেকে নতুন সেতু এলাকায় এসে নামেন ২৫ বছরের এক নারী। তিনি নিজ বাড়ি যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অটোচালকসহ দুই যুবক তাকে ফুসলিয়ে হবিগঞ্জে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের গতিবিধি বুঝতে পেরে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশায় হবিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন ওই নারী। তখন রাত ৮টা বাজে। এদিকে ওই নারীকে অনুসরণ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি। কলিমনগর এলাকায় পৌঁছলে তাকে বহনকারী অটোরিকশাটির ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যায়। এ সুযোগে ওই নারীকে কৌশলে নিজের গাড়িতে তোলেন সিএনজিচালিত অটোচালক জনি মিয়া। তার অটোতে আরো ছিলেন সুজন ও শামীম। পরে দ্রুত অটো চালিয়ে ধুলিয়াখাল-মিরপুর সড়কে প্রবেশ করে লস্করপুর ইউনিয়ন অফিসের অদূরে নির্জন বাগানে নিয়ে যায় তারা। সেখানে অটোরিকশায় ওই নারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা।
পরে তারা ওই নারীকে নিয়ে হবিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে চরহামুয়া পয়েন্টে এলে দোকানপাট খোলা দেখে চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগী নারী। পরে স্থানীয়রা ঘেরাও করে অটোসহ সুজন ও শামীমকে আটক করে। তবে অটোচালক জনি মিয়া পালিয়ে যান। এরপর তাদের মারধর করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ ছাড়া ভুক্তভোগী নারীকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় মামলার পর সোমবার সন্ধ্যায় সুজন ও শামীমকে আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামি জনিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।