বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৪:১৭:৫২

সেই চার শিশুকে যেভাবে হত্যা করা হয়

 সেই চার শিশুকে যেভাবে হত্যা করা হয়

হবিগঞ্জ : সেই চার শিশুকে যেভাবে হত্যা করা হয় ময়নাতদন্তে তা বের হয়ে এসেছে।  হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) দেবাশীষ দাশ বলেন, শিশুদের শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বুকের পাঁজরও ভাঙা ছিল।  এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবারই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।

গতকাল বুধবার চার শিশুর ময়নাতদন্ত হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়।  পরে রাতেই তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশুকে হত্যার পর মাটিচাপা দেয়া হয়।  এ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আরো একজনকে আটক করা হয়েছে।  এ নিয়ে এ ঘটনায় আটকের সংখ্যা তিনজনে দাঁড়াল।

গতকাল বুধবার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদুল আলী বাগাল (৫৫) ও তার ছেলে জুয়েল মিয়াকে (২৫) আটক করা হয়।  আজ ভোরে আরজু মিয়া নামের আরো একজনকে আটক করা হয় বলে ডিবি পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ ছাড়া লোমহর্ষক এ ঘটনার তদন্ত করার জন্য গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন।  তিনি জানান, পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।  এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক আবদুল আলী ও জুয়েল মিয়াকে ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

গতকাল দুপুরে ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের নিখোঁজ চার শিশুর লাশ পাঁচদিন পর বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তারা হলো বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার দুই চাচাতো ভাই আবদুল আজিজের ছেলে একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে একই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আবদুল কাদিরের ছেলে সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাঈল হোসেন (১০)।

নিখোঁজ শিশুরা শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ির পাশের মাঠে খেলাধুলা করতে গিয়েছিল।  সন্ধ্যা হলে তারা বাড়িতে ফিরে না আসায় অভিভাবকরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন।  কোথাও তাদের সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার রাতেই মাইকযোগে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন লোক মাটি কাটতে গিয়ে বাতাসে দুর্গন্ধ পান। এরপর তাঁরা নিখোঁজ শিশুদের বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় একটি শিশুর হাত ও আরেক শিশুর পা দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।  পরে পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে।

এদিকে চার স্কুলছাত্রের হত্যার ঘটনায় আটক আব্দুল আলী ও তার ছেলে জুয়েলের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন হবিগঞ্জের একটি আদালত।  বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালত এ  রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে