বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৯:০৪:১৪

‘তাবিজ নিতে বলেছিলেন সেই ওসি’

‘তাবিজ নিতে বলেছিলেন সেই ওসি’

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : চার শিশু অপহরণ হওয়ার পর অভিভাবকরা থানায় অভিযোগ করতে গেলে হবিগঞ্জের বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন তাদের ‘তাবিজ নিতে ও তজবি পড়তে’ বলেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহত শিশুদের পরিবারের সদস্যরা।  

ওসি তাদের আত্মীয় বাড়ি ও মেলায় খোঁজ নিতে বলেছিলেন।  অথচ ঘটনার চারদিন পর নিখোঁজ শিশুদের লাশ উদ্ধার করা হয়।  শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ির পাশের মাঠে খেলাধুলা করতে গিয়েছিল তারা।  সন্ধ্যা হলে তারা বাড়িতে ফিরে না আসায় অভিভাবকরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন।  কোথাও তাদের সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার রাতেই মাইকযোগে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়।

নিখোঁজের পাঁচদিন পর চার শিশুর মরদেহ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উদ্ধার করা হয়।  লাশগুলো মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল।

নিহত শিশুরা হলো- উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে স্থানীয় স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তাজেল মিয়া (১০), আবদাল মিয়ার ছেলে প্রথম শ্রেণীর ছাত্র মনির মিয়া (৭) ও তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।

নিহত শিশু মনির মিয়ার বাবা আবদাল মিয়া তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, মাসখানেক আগে গাছ কাটা নিয়ে একই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  এরই জের ধরে আব্দুল হাই আমার ছেলেসহ নিহত চার শিশুকে তুলে নিয়ে খুন করে।

নিহত শিশু শুভর বাবা ওয়াহিদ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পরদিন আমি বাহুবল থানায় অভিযোগ করতে যাই।  এ সময় ওসি আমাকে আত্মীয় বাড়ি ও মেলায় খোঁজ নিতে বলেন।  একপর্যায়ে ‘তাবিজ নিতে ও তজবি’ পড়তে বলেন।  তার অভিযোগের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।

বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করেন বলেন, ঘটনার পরদিন নিখোঁজ শিশুদের অভিভাবকরা আসলে জিডি নেয়া হয়।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।  বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের হাবিবুর রহমান ও রুবেলকে আটক করে পুলিশ।  বুধবার রাতে আবদুল আলী ও জুয়েল মিয়া নামের আরো দুই যুবককে আটক করে বাহুবল থানা পুলিশ।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. আবু নাইম হাসান ও ডা. দেবাশীষ জানান, শিশুদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।  তাদের বুকের পাঁজরে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে