হবিগঞ্জ : মাত্র ৫ টাকার জন্য দুই গ্রামে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জে। ইজিবাইকের ভাড়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মাঝে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ও যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। আবারো সংঘর্ষের আশঙ্কায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গোপায়া গ্রামের কামরুল ইসলাম স্থানীয় ধুলিয়াখাল তেমুহনা থেকে মঙ্গলবার রাতে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকযোগে বাজারে যান।
তিনি ইজিবাইকের ভাড়া ৫ টাকা দেন। কিন্তু তেতৈয়া গ্রামের বাসিন্দা ইজিবাইকচালক সুজন মিয়া ১০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কামরুল উত্তেজিত হয়ে সুজনকে মারপিট করেন।
এ খবর পেয়ে তেতৈয়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। তারা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানায়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গোপায়া গ্রামের লোকজনও একই কায়দায় সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। তারাও মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালায়। রাত ১০টায় তারাবিহ'র নামাজ শেষে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। বুধবার ভোরে ফজরের নামাজের পর পুনরায় সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিতে উভয় গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালানো হয়।
ভোরে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
এ সময় ধুলিয়াখাল-মিরপুর সড়কের গোপায়া বাজার ও আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
আগুনে একটি ফ্রিজ ও একটি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। লুট করা হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালামাল।
এ সড়কে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি যানবাহনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সংঘর্ষে আহতদের কয়েকজন সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হলেও বেশির ভাগই গ্রেফতার আতঙ্কে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন জানান, ইজিবাইকের ভাড়া নিয়ে দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
সংঘর্ষের আশঙ্কায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
৮ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম