বেনাপোল : বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দরের পণ্যাগার। পণ্যাগারের ২৩ নম্বর শেডে রোববার ভোর ৬টায় আগুন লাগে। তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল সোয়া ৯টার দিকে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি বলে বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা কওছার আলী জানান।
ওই শেডে আমদানি করা প্রসাধনী ও বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মজুদ করা ছিল বলে বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র সেনের ধারণা, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে সেখানে আগুন লেগেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে ২৩ নম্বর শেড থেকে ধোঁয়া উঠতে শুরু করে এবং পরে সেখানে আগুন জ্বলে ওঠে। এক পর্যায়ে আগুন বন্দর শেড থেকে পাশের বেনাপোল পোর্ট থানা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার ব্রিগেড বেনাপোল স্টেশনের একটি ইউনিট শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে ঝিকরগাছা, যশোর ও মণিরামপুরের ছয়টি ইউনিট তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
বন্দর থানার ওসি অপূর্ব হাসান জানান, থানা ভবনের আগুন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন। ২৩ নম্বর শেডে রাখা পণ্যের পাশাপাশি গুদামের পাশে খোলা আকাশের নিচে রাখা বিভিন্ন মালামাল ভস্মিভূত হয়েছে।
পণ্য খালাশ করে গুদামের পাশে রাখা তিনটি ভারতীয় ট্রাকও পুড়ে গেছে। তবে আগুন পুরোপুরি না নেভায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুস সালামও ঘটনাস্থলে এসেছেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বৈদ্যুতিক গোলযোগের সন্দেহের কথা বললেও বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলছেন, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানোর সন্দেহ তারা উড়িয়ে দিতে পারছেন না। এর আগেও বেনাপোল বন্দরে এভাবে সন্দেহজনক আগুন লেগেছে। প্রতিবারই বন্দর কর্তৃপক্ষ শর্ট সার্কিটের কথা বলেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্যের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। বছরে প্রায় ১২ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী ও দেড় লাখ ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াত করে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর বেনাপোল হয়ে ১৭ লাখ ৬৪ হাজার টন পণ্য আসা-যাওয়া করেছে।
০২ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম