সিদ্ধার্থ সিধু : জাতীয় সংসদে দেশের প্রাচীনতম জেলা যশোরকে বিভাগ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি জানান।
একইসঙ্গে যশোর-৩ (সদর) আসনের এই সংসদ সদস্য যশোর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীতকরণ, বিমান বন্দর ও স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার দাবি জানান। কাজী নাবিল আহমেদ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতির ভাষণকে তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়নমুলক কর্মসূচির বাস্তবচিত্র বলে উল্লেখ করেন।
কাজী নাবিল বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন বজায় রেখেছে। যা বিশ্ববাসীর কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ আজ সম্মানজনক স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য আজ সর্বজনবিধিত। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’
যশোরের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ব্রিটিশ ভারতের প্রথম জেলা ও দ্বিতীয় পৌরসভা যশোর দীর্ঘকাল ধরে অবহেলিত থাকায় যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কারণে তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা বাংলাদেশের প্রথম জিডিটাল জেলা।’
কাজী নাবিল আহমেদ তার বক্তব্যে যশোর মেডিক্যাল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক উদ্বোধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। এছাড়া তিনি যশোর বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তর ও শামসুল হুদা স্টেডিয়ামকে জাতীয় স্টেডিয়ামে পরিণত করে নিয়মিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের আয়োজনসহ পর্যটন করপোরেশনকে দিয়ে থ্রি-স্টার মানের মোটেল নির্মাণ, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সড়ককে প্রশস্তকরণের দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘শামসুল হুদা স্টেডিয়ামকে আধুনিকায়ন করা, বিমান বন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন ও ভৈরব নদকে খনন করে প্রবহমান নদে রূপান্তরের প্রচেষ্টা, যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নতকরণ, যশোর এমএম কলেজে একাধিক হোস্টেল নির্মাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন কলেজিয়েট স্কুল নির্মাণ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও কোতোয়ালী থানার সৌন্দর্যকরণ, জজ কোর্টের জন্য আধুনিক ভবন নির্মাণ, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ৫০টির বেশি রাস্তা নির্মাণ, ১০ হাজার নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া, মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, ৪১টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণ ও পুরাতন ভবনে সংস্কার কাজ আমরা ইতোমধ্যে করতে পেরেছি। কিছু কিছু কাজ এখনও চলমান রয়েছে।’
জেলার চলমান উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘প্রায় ৩’শ কোটি টাকা প্রকল্পের ভৈরবনদ খনন করে নৌচলাচল শুরু হলে যশোর থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত শিল্প ও বাণিজ্যকি নগরী গড়ে উঠবে। রাজধানীর সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগ সহজীকরণ, মংলা-খুলনা-নওয়াপাড়া-যশোর নৌ যোগাযোগ স্থাপিত হলে অর্থনৈতিক ভাবে আরও বেশি গতিশীল হবে মংলা সমুদ্রবন্দর, শিল্পনগরী খুলনা, বৃহত্তম স্থল বন্দর বেনাপোল এবং যশোরের অর্থনীতি। যা হবে উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমাণের বিরাট মাইলফলক।’
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি