যশোর: সবজি জোন খ্যাত যশোরে অনুকূল আবহাওয়ায় এবার প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে অবরুদ্ধ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপুল এই সবজি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বিক্রির অভাবে উৎপাদিত সবজি মাঠেই পড়ে থাকছে।
এমন পরিস্থিতিতে সবজি নিয়ে বিপাকে থাকা কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী। কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি লাঘব করতে সরাসরি মাঠ থেকে সবজি কিনছে যশোর সেনানিবাস। গত বুধবার (২৯ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে এই সবজি ক্রয় কার্যক্রম। আগামী অন্তত একমাস এ কার্যক্রম চলবে। দুঃসময়ে এভাবে পাশে দাঁড়ানোয় সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় গোটা দেশেই এখন অবরুদ্ধ অবস্থা চলছে। সব ধরণের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এক জেলার সঙ্গে অন্য জেলার যোগাযোগও তাই বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে পণ্য পরিবহন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এসব কারণে সবজির পাইকারি কারবারিরাও ব্যবসা অনেকটা গুটিয়ে রেখেছেন। এমনকি হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় নিজ জেলাতেও সবজির সরবরাহের সুযোগও সীমিত। এমন অবস্থায় ভরা মৌসুমে উৎপাদিত পণ্য ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশ'ঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই সং'কটের সময়ে কৃষকের লোকসান ঠেকাতে ন্যায্যমূল্যে সরাসরি মাঠ থেকে সবজি কেনা শুরু করেছে সেনাবাহিনীর যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশন। সেনাপ্রধানের অনুপ্রেরণায় যশোর সেনানিবাসের ৪০টি ইউনিট আগামী এক মাস তাদের দৈনন্দিন খাবারের জন্য সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনছে। মূলত গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের ক্ষেত ও গ্রামের ছোট বাজার থেকে এই সবজি কেনা হবে। এভাবে আগামী এক মাস সবজি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে করে কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হয়।
যশোর ক্যান্টনমেন্ট ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৮৮ ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল নেয়ামুল হালিম খান জানান, যশোরে সেনানিবাসের জন্য প্রচুর পরিমাণ সবজির চাহিদা রয়েছে। আর ঠিকাদাররা দৈনন্দিন চাহিদার সেই সবজির যোগান দিত। কিন্তু দেশের সাম্প্রতিক এই সং'কট মুহূর্তে সেখান থেকে সরে আসা হয়েছে। এখন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। এর ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা যেই মুনাফা পেতো সেটি বন্ধ হওয়ায় কৃষকরাও লাভের মুখ দেখছেন।
তিনি আরও জানান, কৃষকরা যাতে ন্যায্য দাম বঞ্চিত হয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন না হন মূলত সেই জন্যই সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ। করোনার প্রভাব থেকে কৃষকদের কষ্ট ও দুর্দশা লাঘবের জন্য সেনাপ্রধান এমনটি করার জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।