নয়ন খন্দকার : এক সময় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বড় বড় গাছের ডাল ও গাছের গুড়ি কেটে খড়ি তৈরি করে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন অনিল কুমার দাস। সেই অনিলের বয়স এখন ৯০ বছর। বয়সের ভারে ন্যুজ অনিল ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারেন না। বিয়ের পর দুই মেয়ে চলে গেছেন ভারতে। এখন দেখার মত কেউ নেই তার। স্ত্রীকে নিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১নং সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ছোটভাটপাড়া গ্রামের ছোট্ট একটি কুড়ে ঘরে বসবাস করেন তিনি। চলতি পথে বয়স্ক এই ব্যক্তি বললেন, ‘আমার একটা বয়স্ক কার্ড করে দাও না বাবা, আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতা পাবো? সবাই শুধু কথা দেয় কিন্তু কেউ কথা রাখে না।’
অনিল কুমার দাস বলেন, ‘একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য কত জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। অনেকে কথা দিয়েছে কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। বয়স ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে দু’বছর আগে আমার এলাকার এক জনপ্রতিনিধি তিন হাজার টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় কার্ড হয়নি।’
অনিল কুমার দাস কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘প্রায় দিনই না খেয়ে থাকতে হয়।’
ছোটভাটপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা আগের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে অনিলের জন্য একটি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলেছি। সবাই বলে, করে দেবো। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই বয়স্ক মানুষটাকে কেউ একটা কার্ড করে দিতে পারলো না।’
ছোটভাটপাড়া গ্রামের কাদের মেম্বার জানালেন, আমি নতুন মেম্বার হয়েছি। অনিলের বিষয়টি আসলে খুবই দুঃখজনক। তবে এবার বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়ার সুযোগ আসলে অবশ্যই আমি অনিল কুমার দাসকে কার্ডের ব্যবস্থা করে দেবো।
এ ব্যাপারে ১নং সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াস রহমান মিঠু জানান, দুই বছর পর পর প্রতিটি ইউনিয়নে ১৬ থেকে ১৮টি বয়স্ক কার্ড আসে। কিন্তু বয়স্ক ভাতার লোক থাকে অনেক বেশি। এই বিশাল চাহিদার ভেতর দিয়ে সীমিত সাধ্য দিয়ে সবকিছু পূরণ করা সম্ভব হয় না। তবে আমি তাকে কার্ড করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবো। -বাংলা ট্রিবিউন।
১৯ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম