বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩, ০১:২৬:০৬

অন্ধ মা আর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে, শিকলবন্দি তাদের জীবন!

অন্ধ মা আর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে, শিকলবন্দি তাদের জীবন!

এমটিনিউজ ডেস্ক: মা অন্ধ আর ছেলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে মা রহিমা বেগমের কোমরের সঙ্গেই তার ছেলে আবদুর রহমানের (১০) কোমরে শিকলবন্দি করে রাখেন। তবে তারা শহরে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ান।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) শহরে এসেছিল ভিক্ষা করতে। কিন্তু সন্ধ্যার পর মা রহিমা অসুস্থ হয়ে পড়লে আশ্রয় নেয় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। পরে রাত হওয়ায় হাসপাতালের মেঝেতে শিকলবন্দি অবস্থায় মা-ছেলে শুয়ে পড়েন। এ সময় দৃশ্যটি নজরে আসে হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের। এ সময় তারা তাৎক্ষণিক দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেন। এরপরই ভাইরাল হয়ে পড়ে ঘটনাটি।

জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের অন্ধ রহিমা হতদরিদ্র ভ্যানচালক ছালাম হোসেনের স্ত্রী। এদিকে ফেসবুকে ওই মানবিক পোস্টটি দেখে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি তাৎক্ষণিক ওই মা-ছেলের শোবার জন্য বেডের কাপড়সহ চিকিৎসার সহায়তার ব্যবস্থা করেন। তারা দ্বিতীয় তলাতে উঠেই দেখেন মেঝেতে শেকলবন্দি অবস্থায় মা ও ছেলে শুয়ে রয়েছে।

মা রহিমা বেগম জানান, প্রায় ৮ থেকে ৯ বছর আগে তাদের বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সেই আগুনে তিনি দগ্ধ হন এবং মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দৃষ্টি শক্তি হারান। তার স্বামী একজন হতদরিদ্র ভ্যানচালক। সংসারের অভাব অনটনের কারণে তাকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়।

তিনি আরও জানান, তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি শিশু সন্তান হারিয়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কায় তার কোমরের সঙ্গে শিকলবন্দি করে ছেলেকে আটকে রেখেছেন। মঙ্গলবার ভিক্ষা করতে এসে একটু অসুস্থতা বোধ করায় তিনি এ হাসপাতালের মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার (৩০ আগস্ট) সকালে মা ও ছেলে বাড়িতে ফিরে যান।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. কৌশিক আহম্মেদ জানান, তিনি রাতে ছিলেন না। খবর নিয়ে জেনেছেন, ওই রাতে একজন নারী হাসপাতালের আশেপাশে ঘোরাঘুরির পর রাতে থাকার জন্য মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছিল। বুধবার সকালে তারা চলে গেছেন।

অন্ধ মা ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়া পৌর মেয়র আশরাফ বলেন, মা ও ছেলের এক শিকলবন্দি জীবনের দৃশ্যটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি ফেসবুকে ছবি দেখার পর তাদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। অন্ধ রহিমার সঙ্গে কথা বলেছি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে