শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৬, ০৭:০৩:০৬

গুলশানে নিহত হামলাকারী নিব্রাসের সঙ্গে একই মেসে থাকতেন আবীর

গুলশানে নিহত হামলাকারী নিব্রাসের সঙ্গে একই মেসে থাকতেন আবীর

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের যে মেসে রাজধানীর গুলশানে কমান্ডো অভিযানে নিহত হামলাকারী নিব্রাস ইসলাম ছিলেন, সেখানে শোলাকিয়ার হামলাকারী আবীর রহমানও ছিলেন।

ঝিনাইদহ শহরের হামদহ সোনালীপাড়া এলাকায় ওই মেসে আট ছাত্র গত ফেব্রুয়ারিতে উঠেছিলেন বলে বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য কওছর আলী স্ত্রী জানান।

গত ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যার পর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হন।

তার ছয়দিনের মধ্যে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় বাংলাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের কাছে পুলিশের ওপর হামলার পর আবীরের লাশ পাওয়া যায়।

স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান নিব্রাস ও আবীর দুজনই ঢাকার বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।  তারা দুজনই গত কয়েক মাস ধরে পরিবারের কাছে নিখোঁজ ছিলেন।

নিব্রাসের ছবি গণমাধ্যমে আসার পর ঝিনাইদহের ওই মেসের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, তারা গত কয়েক মাস ধরে নিব্রাসকে দেখেছিলেন।  তাকে সাঈদ নামে চিনতেন।

আবীরকেও ওই মেসে নিব্রাসের সঙ্গে ঘুরতে দেখেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন।

‌কওছর আলীর স্ত্রী বিলকিস নাহার গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, যে আট তরুণ তার বাড়িতে মেস ভাড়া নিয়েছিলেন, তারা সবাই ঈদের আগে চলে যান। এরপর আর কেউ ফিরে আসেনি।

২২ বছর বয়সী আবীরের বাসা ঢাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকে।  ছেলে নিখোঁজের খবর জানিয়ে গত মার্চ ভাটারা থানায় জিডি করেছিলেন তার বাবা।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়াল থেকে ‘এ লেভেল’ পাস করার পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে ভর্তি হয়েছিলেন আবীর।

শোলাকিয়ায় আবীরের লাশের কিছুটা দূরে একটি চাপাতি পড়ে ছিল।  তার ঢোলা পোশাকে অস্ত্র রাখার ‘বিশেষ পকেট’ ছিল বলেও পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ায় আবীরের লাশ তার পরিবার গ্রহণ করেনি।  তাকে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় কিশোরগঞ্জেই দাফন করা হয়।

আবীরের মতো নিব্রাসও গত ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন।  গুলশান হামলাকারী আরো তিনজন তার মতোই ঘরছাড়া ছিলেন বলে জানায় পুলিশ।।

নিব্রাস ও আবীরসহ আটজনকে ওই মেসে স্থানীয় দারুস সালাম মসজিদের ইমাম রোকনুজ্জামান রোকন তুলেছিলেন বলে বাড়ির মালিকের দাবি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রোকনের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের নাইড়া গ্রামে।

তিনি ঝিনাইদহে থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।  বাড়িতে তার যাতায়াত কম ছিল বলে গ্রামবাসী জানায়।

বিলকিস সাংবাদিকদের বলেন, মেসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা থাকবে বলে ইমাম রোকনুজ্জামান ওই বাড়ি ভাড়া দিতে বলেছিলেন।

‘প্রথমে দুজন ওঠে।  পরে আরো ছয়জন আসে। এরপর তাদের কাছে বাসা ভাড়া দেয়া হয়।

ইমাম রোকনুজ্জামান ও বাড়ির মালিক কওছরকে পুলিশ পরিচয়ে ঈদের আগের দিন ধরে নেয়া হয় বলে জানান বিলকিস।

তবে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন তাদের আটকের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

শোলাকিয়ায় হামলাকারীদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পিস্তলসহ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন এক যুবক।
শফিউল ইসলাম ওরফে আবু মোকাদ্দেল নামের ১৯ বছর বয়সী ওই যুবক দিনাজপুরের একটি মাদ্রাসার ছাত্র।

শফিউল আলিম পরীক্ষা শেষ না করেই ‘ওস্তাদের নির্দেশে’ শোলাকিয়ায় হামলা চালাতে আসে বলে র‌্যাবের ভাষ্য।
১৬ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে