সোমবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:০২:১১

ভিজা বাউন্তি এলাকায় বসতঘরে হামলা, ব্যাপক ভাংচুর-লুটপাট

ভিজা বাউন্তি এলাকায় বসতঘরে হামলা, ব্যাপক ভাংচুর-লুটপাট

মোঃ মিনহাজুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ মানিকছড়ি ও রামগড় সীমান্তবর্তী বাঙ্গালী লোকালয় হাতিমুড়ার অদূরে ভিজা বাউন্তি নামক  এলাকায় সোমবার গভীর রাতে সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালীদের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। ফলে এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে চট্রগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাঙ্গালীরা। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

 

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি ও রামগড় সীমান্তবর্তী হাতিমুড়ার অদূরে ভিজা বাউন্তি নামক এলাকায় সোমবার রাত আনুমানিক ১১টায় শতাধিক উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দল-বল নিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এতে সর্বস্বান্ত করেছে ৩ বাঙ্গালী পরিবারকে! সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই এলাকায় গত ১৯ বছর ধরে স্ব-পরিবারে বসবাস করছে মো. এমাদুল শরীফ, আবদুর রাজ্জাক, মো. বাবুল মিয়া। সোমবার রাতে শতাধিক

উপজাতি সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ওই পরিবারদের তিনটি ঘরে একযোগে ভাংচুর শুরু করলে প্রাণের ভয়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ওরা পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা ৩টি বসত ঘর কুপিয়ে ফেলে দেয় এবং ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে ২টি গরু, ১টি ছাগল, ৫টি মোরগ, ২ বস্তা টিএসপি সার ও কাপড়-চোপড় করে নিয়ে যায়।

 

 

খবর পেয়ে পাশের এলাকার বাঙ্গালীরা ছুঁটে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী

ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সকালে বাঙ্গালীরা চট্রগ্রাম-

খাগড়াছড়ি সড়কের হাতিমুড়ায় সড়ক অবরোধ করে যান-বাহন আটকে দেয় এবং বিক্ষোভ মিছিল বের করে। খবর পেয়ে রামগড় থানার এএসপি (সার্কেল) মো. ইউনুছ মিয়া ঘটনাস্থলে ছুঁটে আসেন

এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে বাঙ্গালীরা অবরোধ

তুলে নেয়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নিরাপত্তাবাহিনী উপজাতীয় ৬ জনকে আটক করেছে।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ তোফায়েল আহম্মেদ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজোরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মোঃ মজিদ আলী, সিন্দুকছড়ি জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল রাব্বি আহসানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এসময় সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানান রিজিয়ন কমান্ডার এবং তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সিন্দুকছড়ি জোনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান করেন।

 

 

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই খাগড়াছড়ি উপজেলার হাতিমুড়ার ভিজাবাউন্তি এলাকায় চাঁদা না পেয়ে

পাঁচ বাঙ্গালি শ্রমিকের সর্বস্ব ছিনতাই করে নিয়ে যায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। এসময় আগামী ৭ দিনের মধ্যে চাঁদা না দিলে ওই শ্রমিকদের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে যায়।

 

 

সূত্র মতে, ২৯ জুলাই সকাল ১০, ০০ টায় হাতিমুড়ার ভিজাবাউন্তি এলাকায় একদল পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা বাঙ্গলিদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করতে আসে । সেই সময় মোঃ মনির হোসেন, মোঃ সালাউদ্দিন, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ বাবুল মিয়া ও মোঃ এমদাদুল হক নামে ৫ বাঙ্গালী

শ্রমিক ঐ এলাকায় কাজ করছিল । অজ্ঞাতনামা পাহাড়ী সন্ত্রাসী দল ঐ ৫ শ্রমিকের কাছ থেকে চাঁদা

দাবী করে। এসময় শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের নিকট হতে ৫ টি মোবাইল সেট, ২টি কোদাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় । সন্ত্রাসীরা যাওয়ার পূর্বে ৭ দিনের মধ্যে চাঁদা না দিলে তাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয় । বাঙালীদের অভিযোগ একই সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

 

 

তারা সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বাঙালীদের বসত বাড়ি ধংস করে এলাকায় দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এদিকে গত ৫ আগস্ট একই উপজেলায় একটি মাদ্রাসা ও বাঙ্গালীর খামার বাড়ী উপজাতী দুর্বৃত্ত কর্তৃক পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গতকাল ১০ আগস্ট মানিকছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা

সড়ক অবরোধ পালন করেছে বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদ।

১৪ আগস্ট,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে