খুলনা: ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। হালকা বাতাস। এর মধ্যে খুলনার চরেরহাট শ্মশানঘাটে দাঁড়িয়ে চোখ পড়ল ভৈরব আর চারাবিটে নদীর মোহনায় ছোট ছোট কয়েকটি নৌকার ওপর। কাছেই চুলা বানানোর জন্য নাতি সুকান্তকে নিয়ে নদী থেকে মাটি তুলছিলেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা তুলসী দাসী। তিনি বললেন, ওগুলো ইলিশ ধরার নৌকা। বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মোহনায় নৌকার সংখ্যাও বাড়বে। কারণ, ইলিশ ধরার জন্য এমন মেঘলা ও বৃষ্টিমুখর পরিবেশই আদর্শ।
চকিতে মনে পড়ল সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘ইলশে গুঁড়ি’ পদ্যটি:
‘হালকা হাওয়ায় মেঘের ছাওয়ায়
ইলশে গুঁড়ির নাচ,-
ইলশে গুঁড়ির নাচন্ দেখে
নাচছে ইলিশ মাছ...’
এ অবস্থায় গত বুধবার বিকেলে চরেরহাট ঘাট থেকে মাঝারি আকারের একটি ট্রলারে চড়ে পৌঁছানো গেল মোহনায় ভিড় করা নৌকাগুলোর কাছে। নৌকায় থাকা জেলেরা বললেন, প্রতিবছরই ভৈরব-চারাবিটের মোহনায় দু-চারটি করে ইলিশ ধরা পড়ে। এবার পরিমাণ অনেক বেশি, আকারও বড়।
মোহনা থেকে ভৈরবের শাখা নদী চারাবিটে বাঁক নিয়েছে উত্তরের দিকে। চলে গেছে নড়াইলের কালিয়া পর্যন্ত। ওই দিকে অন্তত তিন কিলোমিটার নৌপথে দেখা গেল শতাধিক নৌকা ইলিশ আহরণে ব্যস্ত। মোকামপুর ঘাটের কাছাকাছি একজন জেলের নৌকার পাটাতনের নিচে লাফাচ্ছিল জ্যান্ত ইলিশ। কাছাকাছি জায়গায় আরেক জেলে চারটি মাঝারি ও ছোট আকারের ইলিশের দাম হাঁকলেন ১ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি বললেন, সবাই কমবেশি মাছ পাচ্ছেন। বিক্রি হতেও সময় লাগছে না। অনেকে কেবল ইলিশ ধরতেই নতুন জাল কিনেছেন।-প্রথম আলো
১৭ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর