খুলনা থেকে : কলেজ চলাকালীন নিজের কক্ষে টেবিলের ওপর পা তুলে ঘুমাচ্ছিলেন খুলনার ব্রজলাল কলেজের (বিএল কলেজ) অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাদিক জাহিদুল ইসলাম।
এ সময় একজন সাক্ষাতপ্রার্থী অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করেন। ভেতরে ঢুকে দেখতে পান টেবিলের ওপর পা তুলে ঘুমাচ্ছেন অধ্যক্ষ। কোনো সাড়াশব্দ না করে অধ্যক্ষের ঘুমানোর দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন।
পরে সেই দৃশ্য ছেড়ে দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। টেবিলে পা রেখে ঘুমানো অধ্যক্ষের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। শুরু হয় তোলপাড়। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলছেন, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, এটা সবার জন্য দুর্ভাগ্য।
এদিকে, বিএল কলেজের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীরাও অংশ নিয়েছেন এই বিতর্কে। তবে বিএল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সাদিক জাহিদুল ইসলাম আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, টেবিলে পা তোলাটা ঠিক হয়নি। আমি এর জন্য অনুতপ্ত, আমি অনুশোচনায় ভুগছি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাদিক জাহিদুল ইসলাম তার কক্ষে টেবিলে পা তুলে ঘুমিয়ে আছেন।
আর তা নিয়ে শুরু হয় মন্তব্য। কাদা ছোড়াছুড়ি। কেউ তার পক্ষে নিয়ে কিছু বললেই বিপক্ষেও কথা বলছেন অনেকেই। এমনও বলা হয়েছে যে তার হাত অনেক লম্বা। এই ঘটনায় তার কিছু হবে না। আবার অনেকেই বলেছেন, মানুষের অবচেতন মনের কথা। শারীরিক অসুস্থতার কথা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি বলেন, এটা কখন কিভাবে হয়েছে তা জানি না। তবে তিনি একজন ভালো শিক্ষক। জেনে শুনে তিনি এটা করবেন বলে তো মনে হয় না। তবুও এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।
খুলনা মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাদিক জাহিদুল ইসলামের ছবি আমি ফেসবুকে দেখেছি। প্রচুর মানুষ মন্তব্য করেছেন। নতুন করে আমি আর কি বলবো। তবে এটা দুর্ভাগ্যজনক।
বিএল কলেজের সাবেক ছাত্রী শার্মিনা নার্গিস ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, বিএল কলেজের মতো একটা ঐতিহ্যবাহী কলেজের অধ্যক্ষের এটুকু বোধ থাকবে না কোথায় পা উঠিয়ে বসা যায়। তার শরীর খারাপ লাগলে তার পাশে একটা ইজিচেয়ার ছিল তার একজন পিয়নও নিশ্চয়ই আছে। বেল বাজালে নিশ্চয়ই সে আসতো। উনি নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাচ্ছেন আর কিছু লোক উনার পক্ষে সাফাই গাচ্ছেন।
বিএল কলেজের সাবেক অপর একজন ছাত্র এনামুল হক মন্তব্য করেছেন, ধরা খেলেই অসুস্থতার দরখাস্ত, এ যেন নিয়মের চাবি। ধরা পড়েছে তাই অসুস্থ ছিলাম ভুল হইছে-এটা কোনো কথা? এটা যে স্যার একদিন করেছেন তা ই বুঝবো কেমন করে? আমিও এখান থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। স্যারের বিষয়টি আমার কাছেও খারাপ লেগেছে। সকল স্যারদের কাছে অনুরোধ ধরা খাওয়ার আগে সুস্থ হোন।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাদিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ ব্লাডপ্রেসার বেড়ে গিয়ে অসুস্থ বোধ করায় আমার রুমের সাইড টেবিলে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। তবে টেবিলে পা তোলাটা আমার ঠিক হয়নি। আমি এর জন্য অনুতপ্ত, অনুশোচনায় ভুগছি।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস