নিউজ ডেস্ক: ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। বেলা যত বাড়ছে, ভোটারদের উপস্থিতিও তত বাড়ছে। মঙ্গলবার (১৫ মে) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।মোট ২৮৯টি কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ চলছে।
২৫-৩০টি কেন্দ্র থেকে দলীয় এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। যদিও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আবদুল কাদের।
সকাল ১০টার দিকে নগরীর খানজাহান আলী সড়কের আলী মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। এ কেন্দ্রে তিনটি বুথ রয়েছে। এখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এখানে মেয়র ও কাউন্সিলর সব প্রার্থীর এজেন্ট রয়েছে। এখানে ভোট দিতে এসেছেন এক মধ্যবয়সী (৫০)। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে বলে ভোট দিতে আইছি।’
ভালোভাবে ভোট দিতে পেরেছেন বলে জানালেন হিন্দু সম্প্রদায়ের এক বিধবা নারী (৫০)। ভোটকেন্দ্রে কেউ কোনো বাধা দেয়নি বলেও জানালেন এই নারী। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার অপেক্ষা করছেন এক তরুণী (২২)। তিনি বলেন, ‘দেখে তো ভোটের অবস্থা ভালোই মনে হচ্ছে। এ জন্য ভালোই লাগতাছে।’
খুলনার মধ্যে ভালো কাজকর্ম করবে এমন লোককেই ভোট দেবেন বলে পুরুষের লাইনে দাঁড়িয়ে এনটিভিকে বলছিলেন এক ব্যক্তি (৪৫)। তাঁর পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। তিনি বললেন, ‘জনগণের জন্য যে ভালো করবে, তাঁকেই ভোট দেবে এবং আমিও তাঁকেই ভোট দেবো।’
এই বৃদ্ধের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন একজন মধ্যবয়সী। তিনি বলেন, ‘ভালো পরিবেশে ভোট হচ্ছে। এ জন্য আমরা খুব খুশি। যদি এই পরিবেশ শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে, আমরা তাতে খুব খুশি।’
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁরা হলেন, আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক (নৌকা), বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাতপাখা) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)।
খুলনা সিটিতে মোট ভোটার চার লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী দুই লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার রয়েছে চার হাজার ৯৭২ জন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ হোসেন জানান, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হচ্ছে। নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২০৬ নম্বর কেন্দ্র ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২৩৯ নম্বর কেন্দ্রে মোট ১০টি ইভিএম রয়েছে।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ১৪টি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে একটি কেন্দ্র হচ্ছে পিটিআই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে পাঁচটি বুথরয়েছে। এখানে ইভিএম পদ্দতিতে ভোট হচ্ছে। এই কেন্দ্রে পুরুষদের বুথে মোট ভোটার এক হাজার ৫৯৩ জন।
এখানে ভোটারদের বড় লাইন রয়েছে। তবে কোনো ধরনের গোলযোগের অভিযোগ করেননি কোনো ভোটার। বরং তাঁদের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গেছে।
এখানে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানালেন, ইভিএম নতুন পদ্ধতি। ভোটারদের এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কীভাবে ভোট দিতে হবে। সকাল থেকে কোনো ত্রুটি ছাড়াই সবাই ভোট দিতে পারছে। এখানকার ফলাফল অন্য কেন্দ্রগুলোর আগেই পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস