এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : খুলনায় মায়ের মৃত্যুর ৩৬ বছর পর বাবার বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মেয়ে। অভিযুক্ত ডা. শেখ বাহারুল আলম বাহার এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান।
তিনি খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সভাপতি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার বর্তমান সভাপতি তিনি।
অভিযোগকারী শেখ তামান্না আলম খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার কেডিএ এপ্রোচ রোডের বাসিন্দা।
গত ৯ সেপ্টেম্বর তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সোনাডাঙ্গা আমলি আদালতে মামলাটি করেছেন তামান্না। তবে বিষয়টি সম্প্রতি জানাজানি হয়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেয়ে তামান্না নিজেই।
মামলার এজাহার তামান্না অভিযোগ করেন, ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর রাতে দিকে তৎকালীন খ্যাতনামা গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সামসুন্নাহার মিলনের গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। ডা. শেখ বাহার তার স্ত্রী সামসুন্নাহারকে খুন করে সে সময় আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেন। অভিযোগে তামান্না আলম বলেন, রাজনৈতিক ও পেশাগত পরিচয়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী বাবার পরকীয়া এবং নির্মম শারীরিক নির্যাতনে তার মায়ের মৃত্যু হয়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রেমের সূত্রে বিয়ে হলেও পরবর্তীতে বাহারুল আলম একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয়। সামসুন্নাহার নির্যাতিত হতে থাকেন এবং দুই কন্যাকে অস্ট্রিয়ায় পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু মেয়েদের নিয়ে স্ত্রী বিদেশে যেতে পারবেন না—এমন আশঙ্কা থেকে বাহার তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার বিবরণে বলা হয়, ১৯৮৯ সালের সেই রাতে দম্পতির ঝগড়া চলাকালে তামান্না পাশের রুমে ছিলেন। ভোরে তাকে ডেকে এনে মা’কে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখান বাহারুল আলম। পরে তিনি নিজেই মৃত ঘোষণা করেন এবং তার তত্ত্বাবধানে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত হয়।
তামান্না দাবি করেছেন, বিদেশে লেখাপড়া শেষে বিয়ে করে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার পর দেশে ফিরে বাবার নানা কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পান। নানা অপকর্মের ধারাবাহিকতায় তার মনে হয় আমার মাকে হত্যা করা আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালানো হয়েছে। আমি আমার মায়ের হত্যার বিচার এবং সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছিলেন। সেদিন সোনাডাঙ্গা থানার ওসি নিজেই ফোর্স নিয়ে এসে লাশ নামান এবং তৎকালীন সিভিল সার্জনের উপস্থিতিতে সুরতহাল ও পোস্টমর্টেম হয়। তখন তার পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ ওঠেনি। তিনি আরও দাবি করেন, তার স্ত্রীর একটি আত্মহত্যার নোট ছিল, যা আদালতে হাজির করার জন্য সিআইডিকে অনুরোধ করবেন।