এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : খুলনায় নিজ ঘরে শিউলী বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূ ৬ লাখ টাকার জন্য নিজের ছেলের হাতে খুন হয়েছেন। ওই নারীর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। তবে নিহতের মেয়ের দাবি- আম্মুর ৬ লাখের বেশি টাকা ছিল, ধারণা করছি সেটার জন্য ভাই মাকে মেরে ফেলেছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে নগরীর ট্যাংক রোডের রবিউল ইসলামের বাড়ি থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন খুলনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) শাহজাহান আহম্মেদ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিউলী বেগম ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন। গৃহবধূর ছেলে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলেও প্রতিবেশিরা জানান। নিহত গৃহবধূর প্রথম স্বামী নাম মো. সালাউদ্দিন খান। প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর মাত্র এক মাস ১০ দিন আগে তিনি সাগর নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন।
নিহত শিউলী বেগমের বড় মেয়ে কেয়া বলেন, আমার বাবার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর মা সাগর নামে একজনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর এই বাড়িতে ভাড়া থাকেন। এখানে মা, ছোট ভাই আর ওই বাবা থাকতেন। সকালে ১০টার দিকে ওই বাবা ফোন করে আমাকে জানায় তোমার আম্মুকে ফোনে পাচ্ছি না, তুমি একটু যাও। এরপর আমি মায়ের বাড়িতে আসি। কিন্তু ঘরে তালা দেওয়া ছিল। ভাবছি আম্মু কোথাও গিয়েছে, পরে চলে যাই। ভেবেছিলাম নানু বাড়ি ডুমুরিয়া যেতে পারে, আমি বিকালে সেখানে যাই। ছোট মামার কাছে জিজ্ঞেস করলে জানায় আসেনি। পরে আবার ফিরে আসি।
তিনি আরও বলেন, নানু বাড়ি থেকে ফিরে আসার সময় আমার স্বামীকে বলছিলাম আম্মুর জুতা ঘরের সামনে দেখেছি। পরে সন্ধ্যায় আমরা আম্মুর বাড়িতে আসি। এখানে এসে উঁকি দিয়ে দেখি আম্মুর ঘরের গেটে তালা মারা। পরে বাড়িওয়ালাদের ডাক দিলে তারা আসে। রাতে তালা ভেঙে দেখি ঘরের খাটের ওপর আম্মুর মরদেহ পরে আছে।
শিউলী বেগমের বড় মেয়ে কেয়া দাবি করেন, সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে আমার ছোট ভাই রিয়াদ সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে। ঘরে আম্মুর ৬ লাখের বেশি টাকা ছিল, ধারণা করছি সেটার জন্য ভাই মাকে মেরে ফেলেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) শাহজাহান আহম্মেদ বলেন, গৃহবধূর মৃত্যু রহস্যজনক। মা-ছেলে এক বাসায় থাকতেন। বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। পুলিশ তালা ভেঙে বিছানায় ওই গৃহবধূর মরদেহ দেখতে পায়। তবে তার ছেলেকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সিআইডির টিমকে তলব করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।