শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭, ১০:৫৮:৩২

এবার কুড়িগ্রাম-তিস্তা রেললাইনের স্লিপারে বাঁশ! কী বলছেন কর্তারা?

এবার কুড়িগ্রাম-তিস্তা রেললাইনের স্লিপারে বাঁশ! কী বলছেন কর্তারা?

আরিফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম : মৌলভীবাজারের মনু রেলসেতুতে রেললাইনের স্লিপারের ওপরে বাঁশ ব্যবহারের খবর প্রকাশের পর এবার তিস্তা -কুড়িগ্রাম রেলপথের বিভিন্ন জায়গায় কাঠের স্লিপারে বাঁশ এবং লাইনের উভয়দিকে গাছের সরু ডাল ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, বাঁশ ও গাছের ডাল ব্যবহারের কারণে রেললাইন সরে গিয়ে যেকোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা- কুড়িগ্রাম রেলপথের টোগরাইগাট স্টেশনের প্রায় ৫০০ মিটার পূর্ব দিকে যোতগোবরধন (বড় পুলের পাড়) এলাকায় অবস্থিত প্রায় ৫০ মিটার রেল সেতুর ওপর রেললাইনের উভয়দিকে কাঠের স্লিপারের ওপর দিয়ে সরু বাঁশের ফালি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে বাঁশের ফালি লাগানো হয়েছে কুড়িগ্রাম- লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পশ্চিমে ত্রিমোহনী মুক্তারাম এলাকায় অবস্থিত রেলের একটি বক্স কালবার্টের ওপর কাঠের স্লিপারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা থেকে কুড়িগ্রামের রমনা পর্যন্ত প্রায় ৫৭ কিলোমিটার রেলপথের বেশিরভাগ স্লিপার নষ্ট এবং রেললাইন অনেক পুরেনো ও নিম্নমানের। এই রেলপথের অনেক জায়গায় রেললাইনের সংযোগস্থলের প্রয়োজনীয় নাট- বল্টুও নেই। এমনকি কোথাও কোথাও রেললাইনে প্রয়োজনীয় স্লিপার ও লোহার ক্লিপের পরিবর্তে গাছের সরু ডালের টুকরো গেঁথে দিতে দেখা গেছে। এর ফলে সেখানে যেকোনও সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.আরিফুল ইসলাম বলেন, 'এতে কোনও সমস্যা নেই। আমরা সাধারণত বড় বা মেজর সেতুতে কাঠের স্লিপার যাতে স্থানচ্যুত না হয় সেজন্য লোহার পাত ব্যবহার করি। কিন্তু তিস্তা - কুড়িগ্রাম রেল পথে ওই সেতুগুলো মাইনর সেতু হওয়ায় সেখানে বাঁশের ফালি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।'

বাঁশের ফালি দেওয়া রেলের বিধান অনুযায়ী ঠিক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে এই বিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, 'সবসময় চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উপকরণ পাওয়া যায় না বলে এটা আমরা স্থানীয়ভাবে লাগিয়েছি।'
রেললাইনে ব্যবহৃত গাছের সরু ডাল

এই রেলপথে ট্রেন নিয়ে আসা ট্রেনের লোকোলমাস্টার( ট্রেনচালক) নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, তিস্তা থেকে কুড়িগ্রাম হয়ে রমনা পর্যন্ত প্রায় ৫৭ কিলোমিটার রেলপথই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সমসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চালাই, কখন কী হয়। কিন্তু আমরা অপারগ। ওপরের নির্দেশে আমাদের ট্রেন নিয়ে আসতেই হয়।

তবে লালমনিরহাট বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.আরিফুল ইসলাম প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অভাবকেই দায়ী করেন।

তিনি বলেন, 'ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এই রেলপথে গত কয়েক বছর ধরে ২৫ কি.মি. গতিতে ট্রেন চলাচল করছে। রেললাইন সংস্কারের জন্য কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব করা হলেও কোনও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তাই রেললাইন সোজা রাখার জন্য গাছের ডাল ব্যবহার করা হয়েছে।' -বাংলা ট্রিবিউন।
১৩ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে