বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩, ০৭:৩৪:৪৬

নিজের নামে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে পেটাল ছেলে

নিজের নামে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে পেটাল ছেলে

এমটিনিউজ ডেস্ক : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পিতার সম্পত্তি নিজের নামে লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে পিটিয়ে আহত করেছে তার সন্তান। এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্তানের বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জার আলী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের বানুরকুটি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জার আলী দফাদারের বড় ছেলে চার মাস আগে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে মারা যান। এরপর থেকেই তার ছোট ছেলে আব্দুস সাত্তার পিতার সমস্ত জমি নিজ নামে লিখে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে রাজী না হওয়ায় বাবাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন তিনি।

সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘর 'বীর নিবাস' নিজ বাড়ি চালায় নির্মাণ করতে চাইলে বাবাকে বাধা দেন ছোট ছেলে আব্দুস সাত্তার। বিষয়টি গত ১৫ জুলাই সকালে মীমাংসার জন্য স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শালিসি বৈঠকে বসেন। বৈঠকে আলোচনা চলাকালে কাঠের বাতা ও বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বাবার ওপর চড়াও হন তার ছোট ছেলে আব্দুস সাত্তার, তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও তাদের ছেলে রফিকুল ইসলাম।

বৈঠকে বসা লোকজন অপমানিত হয়ে চলে গেলে মারপিটের শিকার হন পিতা ফয়জার আলী। পরে ওই মুক্তিযোদ্ধার বড় ভাইয়ের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও নাতী মেহেদী হাসান আহত অবস্থায় ফয়জার আলীকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান।

মুক্তিযোদ্ধা ফয়জার আলী বলেন, 'আমার বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকেই ছোট ছেলে আমার নিজ নামীয় সকল জমিজমা তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। রাজী না হওয়ায় পূর্বেও একাধিকবার আমি আমার ছোট ছেলের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছি।

মুক্তিযোদ্ধা ফয়জার আলীর স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, জমি লিখে না দেওয়ায় তাদেরকে প্রায়ই প্রাণনাশের হুমকি দেন আব্দুস সাত্তার। তার ভয়ে মাঝে মাঝে বাড়ি ছেড়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেই। এমতাবস্থায় জানের নিরাপত্তা ও এই অন্যায়ের বিচার চান তিনি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। আমি এরকম ন্যাকারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।এরকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।'

ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রুহুল আমিন বলেন, 'এ বিষয়ে আমি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের কাজ চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে