শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১২:২৩

মাইকিং করে সংঘর্ষ, খবর পেয়ে ছুটে আসে সেনাবাহিনী

মাইকিং করে সংঘর্ষ, খবর পেয়ে ছুটে আসে সেনাবাহিনী

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কু‌ড়িগ্রা‌মের চিলমারী ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপ‌জেলা সীমান্তে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্ত্যক্তের জের ধরে মাইকিং ক‌রে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্প‌তিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টা থে‌কে ক‌য়েক দফা চলা এ সংঘ‌র্ষে উভয়প‌ক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়ে‌ছেন। তা‌দের মধ্যে একজনকে চিলমারী উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কম‌প্লেক্স, পরে রংপুর মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি করা হ‌য়ে‌ছে।

চিলমারী থানা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে দুই পক্ষের শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে অংশ নেন। পরে খবর পে‌য়ে সেনাবা‌হিনীর এক‌টি টিম দুপুরে ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে প‌রি‌স্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এলাকাবাসী সূত্র জানা যায়, গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) চিলমারী রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া গ্রামের মা-মেয়ে তিস্তা সেতুতে ঘুরতে গেলে গাইবান্ধার সুন্ধরগঞ্জ উপ‌জেলার হ‌রিপুর ইউনিয়‌নের শহ‌রের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল, সুমন গোপনে ছবি তোলেন এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন। পরে মা-মেয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই কিশোররা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। 

পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার হামেদ আলীর ছেলে সাজু ও রোস্তাম আলীর ছেলে মোতালেব মিয়ার চোখে পড়লে তারা বিষয়টির প্রতিবাদ করেন। এতে শহ‌রের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল, সুমনসহ কয়েকজন মিলে চিলমারী উপজেলার এই দুই যুবকের ওপর চড়াও হয় এবং তাদের মারধর করেন। পরবর্তীতে তারা মারধরের বিষয়টি এলাকায় জানা‌লে লোকজন ক্ষিপ্ত হ‌য়ে ওঠে এবং দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫) তার ভুট্টাক্ষেত দেখতে গেলে শহরের মোড় এলাকার ফখরুলের ছেলে মিস্টারসহ কয়েকজন ব্যক্তি মিলে তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে আলমগীর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তার পরিবারকে ফোনে মারধরের কথা জানায়। আলমগীরকে উদ্ধার করে প্রথমে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়েছে।

পরে ওই ঘটনায় দুই গ্রামের মানুষ মাইকিং করে তাদের লোকজনকে ডেকে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় গ্রামের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। খবর পে‌য়ে কু‌ড়িগ্রাম থে‌কে সেনাবা‌হিনীর এক‌টি টিম ঘটনাস্থ‌লে উপ‌স্থিত হ‌য়ে প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রণে নেন।

চিলমারী রমনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক বলেন, ‘মা-মেয়ের গোপনে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন থেকে দুই গ্রামের মানুষের মাঝে উত্তেজনা চলছিল। আমরা কয়েকবার কথা বলে তাদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ চিলমারীর একজন কৃষক জমিতে কাজ করতে গেলে সুন্দরগঞ্জ শহ‌রের মোড় এলাকার ফখরুলের ছেলে মিস্টার ও কয়েকজন মিলে তাকে মারধর করে আহত করে। ওই ঘটনায় দুই গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল।’

চিলমারী ম‌ডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে দুপুর থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবা‌হিনীর এক‌টি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এরমধ্যে চিলমারী উপজেলার লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেনকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে