কুড়িগ্রাম: উজানের ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রামের নদনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তর থেকে কালজানি নদী হয়ে দুধকুমার নদীতে ভেসে আসছে হাজার হাজার গাছের গুঁড়ি। স্থানীয়দের ধারণা, ভারী স্রোতে বনাঞ্চল থেকে এসব গাছ উপড়ে বা ভেসে এসেছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) বিকাল থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুধকুমার নদীর তীরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন স্থানে গাছের গুঁড়ি ভেসে আসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা নৌকা ও দড়ির সাহায্যে এসব গাছ নদী থেকে টেনে তীরে তুলছেন।
বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙা ও শালঝোড় এলাকায় দুধকুমার নদীর পাড়ে এখন ভেসে আসা গাছ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন নদীতীরবর্তী মানুষরা।
স্থানীয়দের অনেকে জানান, ভেসে আসা অধিকাংশ গাছ কেটে রাখা অবস্থায় ছিল। আবার কিছু গাছ শেকড়সহ উপড়ে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র স্রোতে বনাঞ্চল থেকে এসব গাছ ভেসে এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুটান থেকে জয়গা এলাকা হয়ে ভারতের হাসিমারা বনাঞ্চল (হাসিমারা ফরেস্ট) থেকে গাছগুলো ভেসে আসতে পারে। সীমান্তবর্তী ভারতীয় বাসিন্দারাও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, কালজানী নদীর উজানে হাসিমারা বনাঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে পানি প্রবেশ করে তীব্র স্রোত সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে বনাঞ্চলের গাছপালা উপড়ে গিয়ে নদীতে ভেসে পড়েছে।
ভুটান ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা হয়ে কালজানী নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং এরপরই এ নদী দুধকুমার নামে পরিচিত হয়।
স্থানীয় লেবু মিয়া ও নুর ইসলাম বলেন, নদীর পানির ওপর খালি গাছ আর গাছ। মাঝে মধ্যে মরা গরুও ভেসে আসছে। মনে হচ্ছে, যেন অলৌকিক কিছু ঘটছে।
অন্যদিকে স্থানীয় ঘাটিয়াল আবু সাইদ বলেন, বিকেল ৩টার দিকে গাছগুলো ভেসে আসতে শুরু করেছে। যার যা পারছে, তুলে নিচ্ছে। তবে নদীর পানি এখনও তেমন বাড়েনি, বন্যার আশঙ্কা আপাতত নেই।
শিলখুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বলেন, এখন নদীতে শুধু গাছ আর গাছ। লোকজন নৌকা নিয়ে গাছ ধরে আনছে। এত গাছ কোথা থেকে আসছে বোঝা যাচ্ছে না। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এগুলো ভারতীয় সীমান্ত এলাকা থেকেই এসেছে। আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই।