মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ০৩:৫৩:৪৫

বাসরঘরে বরের মোবাইলে অন্য নারীর কণ্ঠ, বরকে ধরিয়ে দিল কনে!

বাসরঘরে বরের মোবাইলে অন্য নারীর কণ্ঠ, বরকে ধরিয়ে দিল কনে!

কুড়িগ্রাম : জামাই আদর বলতে অন্য আত্মীয়-স্বজনদের থেকে একটু বাড়তি আপ্যায়ন।  কিন্তু সেখানে যদি ঘটে উল্টোটা তাহলে অবাক হবারই কথা।  বাসরঘরে বরের মোবাইলে অন্য নারীর কণ্ঠ শুনে বরকে ধরিয়ে দিল কনে! কেমন জামাই আদরের ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের রৌমারীর চর ফুলবাড়ী গ্রামে? চলুন এবার দেখে নিই সেই ঘটনা।  জামাই ও ঘটককে মাথা ন্যাড়া করে সারাগ্রাম ঘুরিয়ে ‘জামাই আদর’ করা হয়েছে।  এটা সত্যি লজ্জাষ্কর।

ফুলবাড়ী গ্রামের শাহজামালের বাড়িতে বইছিল বিয়ের আমেজ।  বরযাত্রীরাও হাজির।  কাজী সাহেব এসে বিয়ের কাজ শেষ করে দিলেন।  খাওয়া-দাওয়া আর ইষ্টি কুটুম্বদের সমাগমে বিয়ে বাড়িতে আনন্দের উত্তাপ।

বরের বাড়ি অনেক দূরে।  তাই বাসরের ব্যবস্থা হয় কনে বাড়িতেই।  বাসরঘরে হঠাৎ বরের মোবাইল ফোন বেজে ওঠে।  ফোন ধরেন নববধূ।  ও প্রান্ত থেকে মেয়ে কণ্ঠের আওয়াজ-‘কোথায় তুমি?’

এতে এলোমেলো হয়ে যায় সবকিছু।  সঙ্গে সঙ্গে ফাঁস হতে থাকে বরের অতীত কুকীর্তি।  ফেঁসে যান জামাইবাবু ও ঘটক।

মঙ্গলবার জানা গেল বর আতোয়ার রহমানের বাড়ি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে।  পেশায় তিনি ছিঁচকে চোর।  এ পর্যন্ত তিনি বিয়ে করেছেন ৪টি।  এটা তার ৫ম বিয়ে।

আগের স্ত্রীরা তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে কেউ তালাক দিয়েছেন আবার কেউ তালাক না দিয়েই চলে গেছেন।  এর মধ্যে রোজিনা খাতুন নামে তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ২ বছর সংসার করেন তিনি।  সেদিক থেকে একটি দেড় বছরের ছেলেও রয়েছে।

চতুর্থ স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আতোয়ার রহমান ঢাকায় পাড়ি চলে আসেন। সেখানে বছরখানেক থেকে আবার ভালো মানুষ সেজে এলাকায় আসেন।  

নিজ এলাকায় কোনো কনে না পাওয়ায় দূরের কোনো এলাকায় বউ খুঁজতে রফিক নামে এক ঘটকের সহযোগিতা নেন তিনি।  একই উপজেলার ডাটিয়ার চর গ্রামে তার বাড়ি।  

রফিক ঘটক ঘটকালি সূত্রে পরিচয় হয় রৌমারী উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের বক্তজামানের সঙ্গে। ঘটক বক্তজামান বিয়ে করেছেন একই উপজেলার চরফুলবাড়ি গ্রামে।  

তার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় বউ হিসেবে খুঁজে পায় শাহজামালের ষোড়শি কন্যা শাহাজাদিকে।  শাহজামাল মিয়া ওই গ্রামের একজন প্রান্তিক কৃষক। জমিজমা না থাকলেও বর্গা চাষ করে কোনোরকমে ৫ সন্তানসহ ৭ সদস্যের সংসার চালান তিনি।

দু’মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।  এটা হলে কন্যাদায় থেকে মুক্তি পান তিনি।  তাই কোনো কিছু না ভেবেই চাটুকার ঘটকের কথায় কন্যাদান সম্পন্ন করেন তিনি।

কিন্তু পরদিন সব খবরা-খবর জানাজানি হলে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।  গ্রামের মাতবর, ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রামবাসী জড়ো হয় সেই জামাইকে দেখতে আসেন।  কেউ বলছেন, সে প্রতারক, পুলিশে দাও।  কেউবা বলছেন, গাছের সঙ্গে বেঁধে আচ্ছা করে পিটুনি দেয়া হোক।  

আবার কেউ কেউ হাতের কাছে যা পেয়েছে তা দিয়েই উত্তম-মধ্যম দিয়ে জামাই আদর শুরু করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক কাজী এনে ডিভোর্স করিয়ে ঘটক ও বরের মাথা ন্যাড়া করে গ্রাম ঘুরিয়ে বিদায় করে দেন।
২৬ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে