বুধবার, ১১ মে, ২০১৬, ০৮:০০:১১

গ্রামবাসীর চাঁদায় ফরম ফিলাপ করে আল আমিন পেয়েছে জিপিএ ৫

গ্রামবাসীর চাঁদায় ফরম ফিলাপ করে আল আমিন পেয়েছে জিপিএ ৫

নিউজ ডেস্ক : বাবার ক্ষুদ্র ব্যবসার উপার্জনে ৫ জনের সংসার টেনেটুনে চলছিল। দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র আল আমিনের লেখা-পড়া বন্ধ হবার উপক্রম। এ অবস্থায় সে লেখা-পড়ার খরচ চালাতে অন্যের জমিতে দিনমজুরির কাজ করে। সেখান থেকে পাওনা টাকা দিয়েই তার পড়াশোনা চালিয়ে যায়। সবাইকে চমকে দিয়ে সে এ বছর কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ভুবনেশ্বর গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে আল আমিন হক। ৫ সন্তানের মধ্যে সে অসাধারণ মেধাবী। কিন্তু বাবার সামান্য ব্যবসা। আয় কম। ফলে গ্রামবাসীর চাঁদায় ফরম ফিলাপ করে তাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। গ্রামবাসী আল আমিনের এমন ফলাফলে ভীষণ খুশি। গ্রামের লোকজন আল আমিনের বাড়িতে গিয়ে তাকে আশির্বাদ করেছে।

আল আমিনের ফলাফলে গর্বিত কাঁঠালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন। তিনি জানান, আল আমিন সত্যিই একজন প্রতিভাবান ছাত্র। চরম দারিদ্রতার মধ্যে সে চেষ্টা আর পরিশ্রম করে এই সাফল্য পেয়েছে।  প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে সে আরো অনেক দূর যেতে পারবে।

আল আমিনের বাবা খোকা মিয়া জানান, বাড়ি ভিটাসহ ৫ শতক জমি ছাড়া তার কিছুই নেই। এক হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শাকের ব্যবসা করেন স্থানীয় কাঁঠালবাড়ী বাজারে। দৈনিক আয় হয় এক থেকে দেড়শ টাকা। এই নিয়েই টানাটানির সংসার। ছেলে আল আমিনের অদম্য ইচ্ছের কারণে এই ফলাফল হয়েছে। সে দিনে অন্যের আলু, ধান, সবজির ক্ষেতে নানা কাজ করেছে। নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে পড়ালেখার খরচ চালিয়ে নিয়েছে।

ছেলের ভাল ফলাফলে আবেগ আপ্লুত মা লাভলী বেগম জানান, শাক-আর ভর্তা ছাড়া ভাল খাবার জোটেনি ছেলের মুখে। অনেক সময় না খেয়ে স্কুলে যেত আল আমিন। একটা ভাল জামা ছিল না তার। কখনও মেটাতে পারেননি ছেলের কোনো আবদার। নিজের চেষ্টা, বাবা-মায়ের উৎসাহ আর শিক্ষকদের সহায়তায় এমন ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়েছে।-বাংলামেইল
১১ মে, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে