নিউজ ডেস্ক : সারা দেশে কৃষকরা ঠিক মতো ধানের দাম পাচ্ছেন না। এর জন্য কুষ্টিয়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছেন জেলা প্রশাসক ও খাদ্য অফিসের কর্মকর্তারা।
গত ১৫ মে বুবধার দুপুরে সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ভাদালিয়া গ্রাম থেকে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক এই ধান ক্রয় কার্যক্রম। ওই দিন ১৩ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হয়। প্রতি কেজি ধান কেনা হয় ২৬ টাকা দরে।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ, জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ওমর ফারুক ও আলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন শেখসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষকরা যাতে ধানের দাম পায় ও প্রকৃত কৃষক যাতে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারে সেজন্য সদর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার যাছাই-বাছাই করে কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করে দিয়েছেন।
এবার কুষ্টিয়া জেলা থেকে ১ হাজার মেট্রিক টনের বেশি ধান কেনা হচ্ছে। আর সদর উপজেলা থেকে কেনা হচ্ছে প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সারা দেশে কৃষকরা ঠিক মতো ধানের দর পাচ্ছেন না। তাই কুষ্টিয়ায় গ্রামে গিয়ে প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। যাতে করে কৃষকরা প্রকৃত দাম পান। সরাসারি কৃষকদের তালিকা করে দেয়া হয়েছে। একজন কৃষক কমপক্ষে আধা টন ধান সরকারকে দিতে পারবেন।’
এ সময় ধান বিক্রি করতে আসা দহকুলা গ্রামের কৃষক মোশাররফ ও শের আলী জানান, সিন্ডিকেটের কারণে তারা সরকারি গোডাউনে ধান দিতে পারেন না। তবে এবার গ্রামে এসে ধান কেনায় তারা সহজেই ধান বিক্রি করতে পারবেন। এতে কৃষকরা হয়রানি হবে না। ২৬ টাকা কেজি ধান বিক্রি করে তাদের লাভ থাকছে। তবে ধান কেনার পরিমাণ আরও বাড়ানোর দাবি করেন তারা।
এ সময় কৃষক আছের আলী ও মহররম জানান, কমপক্ষে প্রতিটি উপজেলা থেকে ২ থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা উচিত। তাতে কৃষকরা কিছুটা লাভবান হতো। এত অল্প ধান কেনায় সব কৃষক এ সুবিধা পাবে না। তারপরও জেলা প্রশাসন থেকে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা কৃষকদের জন্য ভালো হবে।
এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রকৃত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। কোনো ফড়িয়া বা দালালের কাছ থেকে ধান কেনার কোনো সুযোগ নেয়।’
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই প্রকৃত কৃষকদের বাছাই করে তাদের কাছ থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ধান কেনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ভাবেই কোনো সিন্ডিকেট ধান দিতে পারবে না। বেশি সংখ্যক কৃষক যাতে ধান বিক্রি করতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে কমপক্ষে ৪০ জন কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করা হবে।’