কুষ্টিয়া: সন্তান হারানোর শোকে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বির মা রোকেয়া খাতুন। আহাজারি করতে করতে ছেলে হারানো এই মা বলে চলেছেন, আমার ছেলে কী আপরাধ করেছিলো? কিসের জন্য তারা আমার ছেলেকে এভাবে হ'ত্যা করলো? আমার ছেলে অনেক মেধাবী। সে কারও সঙ্গে উচ্চস্বরে কথাও বলেনি। আর আমার ছেলেকে আজ হ'ত্যা করা হলো। আমি এর বিচার চাই। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। আমার ছেলে কী অন্যায় করেছিলো যে তাকে প্রা'ণ দিতে হলো? আমার ছেলের মতো লাখে একটাও হয় না। সবার ঘরে বেটা থাকতে পারে, আমার ব্যাটার মতো বেটা ছিলো না।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, এটা পরিকল্পিত হ'ত্যাকা'ণ্ড। যে ছেলেটা বিকেল ৫টায় ঢাকায় পৌঁছালো, তাকে ৮টার দিকে নির্যা'তন করার জন্য ডেকে নিয়ে গেল। ছয় ঘণ্টা ধরে নির্যা'তন চালালো। এটা অবশ্যই পরিকল্পিত। আপনাদের কাছে আমি এর বিচার চাই।
প্রসঙ্গত, রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচে'তন অবস্থায় ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃ'ত ঘোষণা করেন।
ওই রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন পি'টিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ময়'নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার ম'রদেহে অসংখ্য আঘা'তের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
এ ঘটনায় বুয়েটের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে আবরার হ'ত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হ'ত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদ রাব্বির দাফন সম্পন্ন হয়। কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা ঈদগাহ ময়দানে তৃতীয় দফা জা'নাজার নামাজ শেষে রায়ডাঙ্গা গোরস্থান ময়দানে তাকে দা'ফন করা হয়। আবরারের জানাজায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।