নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বির দাদা কবর ছুঁয়ে চারপাশ ঘোরেন আর বলতে থাকেন, রাব্বি ভাই, রাব্বি ভাই তুই কেমন আছিস।
শুক্রবার বাদ জুমা আবরারের কবরের সামনে রায়ডাঙ্গা জামে ম’সজিদে কুলখানির আয়োজন করে আবরারের পরিবার। কুলখানি শেষে খুড়িয়ে খুড়িয়ে ম’সজিদের সামনে আবরারের কবরের কাছে ছুটে যান তার দাদা আব্দুল গফুর।
কুলখানিতে রাজনৈতিক কোনো নেতা উপস্থিত না থাকলেও রায়ডাঙ্গাবাসীসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। এ সময় আবরারের পিতা বরকতুল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ, দাদা আব্দুল গফুর ৫ চাচাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আবরার ফাহাদের গ্রাম রায়ডাঙ্গা এক সময়ের বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই গ্রামে আওয়ামী লীগের সম’র্থক হিসেবে পরিচিত দু-একটি বাড়ির মধ্যে একটি আবরারের দাদা আব্দুল গফুরের বাড়ি অন্যতম। আওয়ামী লীগের প্রথম দিকে এবং দুঃসময়ে গফুরের বাড়ি ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যোগাযোগের স্থান। বঙ্গবন্ধুর সহযোগী কুমা’রখালীর সাবেক এমপি ম’রহুম কিবরিয়া এই বাড়িতে অনেকবার মিটিং করেছেন।
অনেকে ব্যঙ্গ করে বলেন, শেখ হাসিনার রাজনীতিতে আসার অনেক আগে থেকেই বিশ্বা’স বাড়ির মানুষেরা আওয়ামী লীগের সম’র্থক ছিলেন। বিপদে আপদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভরসার স্থান ছিল এই বাড়িটি। আব্দুল গফুরের সেই তেজ আজ আর নেই। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। ঠিকমত হাঁটতে ও কথা বলতে পারেন না।
সেই প্রিয় দলের ছাত্র সংগঠনের হাতে তার প্রিয় সম্পদকে হা*রিয়ে শেষ বয়সেও নিজেকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। কুলখানি শেষে খুড়িয়ে খুড়িয়ে ম’সজিদের সামনে আবরারের কবরের কাছে গিয়ে হাও মাও করে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমা’র নাতি রাব্বিকে (আবরার ফাহাদের পারিবারিক নাম) তারা পি’টিয়ে মে’রেছে। কি ক’ষ্ট না পেয়েছে সে। যদি অ’সুখে মা’রা যেত তাহলে স্বাভাবিক, কিন্তু একটা লোককে যদি পি’টিয়ে মা’রা হয় তাহলে কি ক’ষ্ট হয়। আল্লাহ যেন তার আত্মাকে জান্নাতবাসী করেন। আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ বলেন, আমা’র ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করে। আমা’র ছেলে কোনো দিন কারো সঙ্গে খা’রাপ ব্যবহার তো দূরের কথা, জো’রে কথা বলেনি। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করত। পরে তার এক প্রাইভেট শিক্ষকের সঙ্গে সে নামাজ ও তাবলীগে মনোযোগী হয়। আর তার সঙ্গেই এমনটি হলো।