কুষ্টিয়া থেকে : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নে শানপুকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সহকারী শিক্ষকের দাবি বিক্রির সমস্ত টাকা বিকাশের মাধ্যমে এটিও ম্যাডামকে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দরখাস্ত দিয়েছেন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতের আঁধারে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ ও তার লোকজন প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ভবন মাত্র ১৪ হাজার টাকায় শানপুকুড়িয়া গ্রামের মৃত মোবারকের ছেলে বাচ্চুর কাছে বিক্রি করে দেন।
বাচ্চু তার লোকজন দিয়ে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের ইট, বাঁশ, সিমেন্টের খুঁটি ও ছাউনির টিন ভেঙে বাড়িতে নিয়ে যান। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন, এটিও স্যারের নির্দেশে ১৪ হাজার টাকায় ঘর বিক্রি করে ১৩ হাজার ৯০০ টাকা এটিও স্যারকে দিয়েছি। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি জানেন।
নিজের ভুল স্বীকার করে মাফ চেয়ে তিনি আরও বলেন, ঝামেলা হওয়ায় এটিও স্যার পুনরায় টাকা বিকাশে ফেরত দিয়েছেন। বর্তমানে টাকা আমার কাছে আছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য মঙ্গলবার সভাপতির বাড়িতে আলোচনায় বসি। আর এটিও স্যারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হওয়ায় মাঝে মধ্যে টাকা লেনদেন করার কথাও জানান সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সেলিনা খাতুন বলেন, পুরাতন ভবন অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে শানপুকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের সভাপতি লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করেছি।
বিক্রীত টাকা বিকাশে গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষক হারুন আমার কাছ থেকে জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য টাকা ধার নিয়েছিলেন, পরে বিকাশে ১৩ হাজার ৯০০ টাকা পাঠিয়েছেন। এটা ভবন বিক্রির টাকা কিনা আমার জানা নেই, তবে হারুনকে আবার বিকাশেই সেই টাকা ফেরত দিয়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ৭ মার্চ সকালে স্কুলে গিয়ে ভাঙা ভবন দেখে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেনকে অবহিত করি এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ স্কুলের পুরাতন ভবন বিক্রয় করেছেন। তিনি একক সিদ্ধান্তে পুরাতন ভবনটি বিক্রি করেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। কুমারখালী শিক্ষা অফিসার ও কুমারখালী থানার ওসিকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানিয়েছি। তারা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দীন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রধান শিক্ষককে শোকজ করার জন্য ক্লাস্টার এটিওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।