এমটি নিউজ২৪ ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি এসবিএসএলের চেয়ারম্যানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১২। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার মিরপুর ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২ এর কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের জলিল বিশ্বাসের ছেলে হাসান আলী (২৮), একই উপজেলার মহেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে আঙুল হান্নান (৪৩), ওয়াশী গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর মোস্তফা রাশেদ পান্না (৪৭), বাঁশগ্রাম এলাকার মৃত আলাউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে আইয়ুব আলী (২৮), বহুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত আলতাফ শেখের ছেলে হাফিজুর রহমান (২৮)। তাদের কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা হলেন- কোম্পানির চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৯)। সাজ্জাদ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার চরআউশিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে, কোম্পানির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও একই জেলার মহেশপুর উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে মহসীন আলী (৩১) এবং ফিন্যান্স ডাইরেক্টর ও কুমারখালীর গোবরা গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেন (২৮)।
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এসবিএসএল কোম্পানির বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার মিরপুর ও কুমারখালী থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এছাড়া কোম্পানির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি চেক জালিয়াতির মামলা, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মহসিন আলীর বিরুদ্ধে একটি চেক জালিয়াতি ও পাঁচটি স্ট্যাম্প জালিয়াতির মামলা এবং ফিন্যান্স ডাইরেক্টর ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি চেক জালিয়াতির মামলা রয়েছে।
র্যাব-১২ এর কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় সানরাইজ বিজনেস সার্ভিস লিমিটেড (এসবিএসএল) নামে একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি গ্রাহকদের বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায়। কোম্পানিটির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে প্রায় ৩০০ পরিবার।
কুষ্টিয়া ছাড়াও ওই কোম্পানি ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, রাজশাহী জেলায় প্রতারণা করেছে।প্রতারণার জন্য তারা নিজস্ব ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কোম্পানির আইডি খুলতে বলে। প্রতি আইডি থেকে প্রতিদিন ১০ টাকা ও আইডি বাবদ প্রদান করা ১২০০ টাকার সমমূল্যের পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হতো। শুরুর দিকে কিছু গ্রাহক টাকা ও পণ্য পাওয়ার কারণে অনেকেই আইডি খুলতে উৎসাহিত হয়েছিল। এক সময় গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে আত্মগোপনে চলে যায় প্রতারক চক্র। এতে গ্রাহকরা টাকা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। তারা এক শ্রেণির পেশাদার প্রতারক চক্র। তারা এ পর্যন্ত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।