আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটে মাঘের শুরুতে ‘বাঘ কাঁপা’ কনকনে শীতে জনজীবন দুর্ভোগের মূখে পড়েছে। গত দু-তিন দিন ধরে দিনের বেলা শীতের তীব্রতা কম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে উত্তরের হীমেল হাওয়া ঠান্ডার তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। মৌসুমী শীতের প্রভাবে মানুষের পাশাপাশি প্রানীকুলেও নিধারুণ কষ্ট লক্ষ্য করা গেছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, জেলার নদ-নদী তীরবর্তী বিস্তৃণ চর ও দ্বীপ চর এলাকার মানুষজন বেশী শীতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সব এলাকায় শীত ও ঘনকুয়াশা বেশী অনুভূত হওয়ায় গবাদি পশু ও শিশুরা চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। এসব এলাকায় গরম কাপড়ের অভাবে ছিন্নমুল ও দিনমজুর শ্রেণীর মানুষজন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার চর হলদীবাড়ী গ্রামের বৃদ্ধা করিমন বেওয়া জানান, বাবা হঠাৎ করি ঠান্ডা বারি যাওয়ায় কষ্টে আছি। গরম কাপড় নাই। মেম্বার চেয়ারম্যানদের বাড়ির যাবার পাইনা, কায়ই দেয় হামাক গরম কাপড়। সন্ধ্যার পর হাত-পা বের করা যায় না। এ রকম পরিস্থিতি জেলার দুর্গম চরাঞ্চলের সর্বোত্রই। শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা শহরের আশপাশের মানুষজনই বেশী পায়। দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ সমস্যার কারণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো তেমন একটা না যাওয়ায় এসব মানুষ বরাবরই সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়।
শীতের প্রভাবে তীব্র হওয়ায় ডায়রিয়া, সর্দ্দি-কাশি ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনীত রোগে আক্রন্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাতীবান্ধা হাসপাতালে গত ২ দিনে ২৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। এছাড়াও আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে।
হাতীবান্ধা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ নাঈম হোসেন নয়ন জানান, গত ২ দিনে এ হাসপাতালে ৪৫ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এদের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন রয়েছে। হাসপাতালের ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মোঃ আলা উদ্দিন খান জানান, শীত কাতর মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার কম্বল ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরও বরাদ্দের জন্য উচ্চ পর্য়ায়ে আবেদন করা হয়েছে।
১৬ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস