লালমনিরহাট থেকে : তিন বছর ধরে চলছে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। এরই মাঝে প্রেমিকার অভিভাবক আঁচ করতে পেরে মেয়ের অন্যত্র বিয়ের ব্যবস্হা করে, কিন্তু সেইসব বিয়ে ভেঙ্গে দেয় প্রেমিক সাখাওয়াত হোসেন।
বিয়ে ভেঙ্গে দিলেও নিজে বিয়ে করতে গড়িমসি দেখিয়ে উল্টো শারীরিক সম্পর্কে অধিক আগ্রহ প্রকাশ করে, আর সেই সম্পর্কে বাঁধা দেওয়ায় প্রেমিকাকে ফেলে পালিয়ে গিয়েছে প্রেমিক। আর উপয়ান্তর না দেখে গত ৬ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়ীতে অনশনে বসেছে স্কুল ছাত্রী নার্গিস আক্তার।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের শেখ সুন্দর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (১৮ আগস্ট) থেকে শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত অনশনে রয়েছে ওই স্কুলছাত্রী। সে দোয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের শেখ সুন্দর গ্রামের ওই ছাত্রীর সঙ্গে একই এলাকার বদিউজ্জামানের কলেজ পড়ুয়া ছেলে সাখাওয়াত হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। তিন বছর ধরে চলছে তাদের প্রেমের সম্পর্ক।
এরপর সাখাওয়াত স্কুলছাত্রীকে তার বাড়িতে আসতে বলে। কথামতো স্কুলছাত্রী ১৮ আগস্ট সাখাওয়াতের বাড়িতে আসে। এ সময় সাখাওয়াত তাকে বিয়ে না করেই তার সঙ্গে দৈহিক মিলনের চেষ্টা করে। তখন স্কুলছাত্রী চিৎকার করলে সাখাওয়াত পালিয়ে যায়। সেদিন থেকে বিয়ের দাবিতে সাখাওয়াতের বাড়িতে অনশন শুরু করে ওই স্কুলছাত্রী।
ওই দিন রাতে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করতে গ্রাম্য সালিশে বসে। ওই সালিশে দেড় লাখ টাকা যৌতুক ঠিক করলে সাখাওয়াত তার প্রেমিকাকে বিয়ে করতে রাজি হয়। স্কুলছাত্রীর বাবা যৌতুকের পাঁচ হাজার টাকা সালিশ বৈঠকের মাধ্যমেই ছেলেপক্ষকে দেয়।
তবে ঘটনার সাতদিন অতিবাহিত হলেও মেয়েটিকে বিয়ে করেনি সাখাওয়াত, উল্টো বাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এদিকে ঘটনা জানাজানির পর এলাকার কিছু যুবক বদিউজ্জামানের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে সাখাওয়াতের পরিবার। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আ. গফুর ও ইউপি সদস্য সরেজমিনে দেখে গেছেন।
স্কুলছাত্রীর ভাষ্য, অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সাখাওয়াতের সঙ্গে আমার প্রেম হয়। গত তিন বছর ধরে চলছে আমাদের প্রেমের সম্পর্ক। আমাকে বিয়ে করবে বলে পরপর তিনবার আমার বিয়ে ভেঙে দেয় সাখাওয়াত। ১৮ আগস্ট বাড়িতে ডেকে দৈহিক মিলনের চেষ্টা করা হয়। তখন আমি চিৎকার করলে সাখাওয়াত পালিয়ে যায়।
উপায় না পেয়ে সেদিন থেকে বিয়ের দাবিতে সাখাওয়াতের বাড়িতে অনশন করছি আমি। সেই সঙ্গে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর বাবা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সানিয়াজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গেছি, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কোনোপক্ষ এগিয়ে না আসায় বিষয়টি সমাধান করা যায়নি। তাই এখনো অনশন করছে ওই ছাত্রী।