বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬, ০৩:৩৫:১০

পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪ পেল আরিফা

পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪ পেল আরিফা

মোয়াজ্জেম হোসেন : আজন্ম হাত থেকেও যেন নেই আরিফার। এরপরও নিজের অদম্য ইচ্ছা ও প্রবল মানসিক শক্তির জোরে পা দিয়ে লিখে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সে, কৃতিত্বের সঙ্গে অর্জন করেছে জিপিএ-৪.১১।

আরিফা খাতুন লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখা থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর আগে প্রাথমিকে মেধা তালিকায় পঞ্চমে থাকা আরিফা খাতুন জেএসসি পরীক্ষায় জিপি-এ ৪.৪ পায়।

পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট আরিফা খাতুন পড়াশোনায় মেধাবী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তার অপর দুই ভাই ও দুই বোন স্বাভাবিক হলেও আরিফা জন্মের পরই প্রতিবন্ধী হয়ে যায়।

আরিফা খাতুনের দুটি হাতই সম্পূর্ণ অচল হওয়ায় পা দিয়েই তাকে সকল ধরনের কাজ করতে হয়। লেখা, আঁকা, পানি পান করা, মাথায় চিরুনি দেওয়া এর সবই পা দিয়ে করে সে। মা মমতাজ বেগম তাকে খাইয়ে দেন, গোসল করিয়ে দেন আর পোশাক পরতে সহযোগিতা করেন।

আরিফার বাবা আব্দুল আলী একজন তালা মিস্ত্রি আর মা মমতাজ বেগম গৃহিনী। সদর উপজেলার খোড়ারপুল শাহীটারী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আলী তার মেয়েকে পড়াশোনা করিয়েছেন অতি কষ্টে।

পরীক্ষার ফলাফল জানতে পেরেও আরিফা খুশি হতে পারেনি। সে জানায়, ইচ্ছে থাকলেও তার মতো দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারে না বলেই দেখেছে। এরপরও সে স্বপ্ন দেখছে অনেক দূরে যাওয়ার।

পড়াশোনা করে কী হতে চায় জানতে চাইলে আরিফার কথা, ‘আইনজীবী হবো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবো। আইনের সহায়তাবঞ্চিত মানুষের হয়ে কাজ করবো।’

ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী আরিফা খাতুন তার অদম্য ইচ্ছা থেকে আজ কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাস করেছে। দরিদ্রতার কারণে যেন তার পড়ালেখায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ট না হয়। দারিদ্র্য ও প্রতিবন্ধী জীবনকে জয় করে আরিফা একদিন তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে।

আরিফার বাবা আব্দুল আলী ও মা মমতাজ বেগম মেয়ের এমন ফলাফলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবন্ধী হয়েও আরিফা আজ আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ও একদিন অনেক বড় হবে। -বাংলা ট্রিবিউন
১২ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে