লালমনিরহাট : ‘হয় আমার সঙ্গে থাক, নইলে ক্রসফায়ারের জন্য প্রস্তুত থাক’— এভাবেই লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার এএসআই গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে আবদুল হক নামে এক ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এক অভিযোগকারীকে শায়েস্তা করতে রাজি না হওয়ায় আবদুল হককে তিনি এ হুমকি দেন।
বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের আদিতমারী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হক এ অভিযোগ করেন। এ সময় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আশরাফুজ্জামান রাজু।
আবদুল হক ও আশরাফুজ্জামান রাজু নিজেদের ডিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন। আবদুল হকের গ্রামের বাড়ি আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জেলার সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন মাদকের বড় চালান আসত ভারত থেকে।
এ মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন এএসআই গোলাম মোস্তফা। তার বিরুদ্ধে একই উপজেলার মহিষাশহর এলাকার নিরণ চন্দ্রের ছেলে শ্যামল চন্দ্রকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ভুয়া মাদক মামলায় আদালতে চালান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে শ্যামল চন্দ্র প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে এএসআই গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাই সম্প্রতি তাকে শায়েস্তা করতে আবদুল হকসহ আরও কয়েক যুবককে চাপ দেন গোলাম মোস্তফা।
তারা রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল হককে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় তিনি আবদুল হককে বলেন, 'প্রয়োজনে ক্রসফায়ারে নিব তোদের। দেখছিস তো শ্যামলকে কীভাবে চালান দিয়েছি। তোরা মন্ত্রী-এমপিদের দিয়েও আমার কিছু করতে পারবি না।'
এ বিষয়ে এএসআই গোলাম মোস্তফার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আবদুল হকই মাদক ব্যবসায়ীদের হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছেন। এ ছাড়া আগামী ১৬ জুলাই জেলা ডিবি পুলিশে তিনি বদলি হচ্ছেন বলেও জানান গোলাম মোস্তফা।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে লালমনিরহাট ডিবি পুলিশের (ওসি) কাওসার আলী খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত গোলাম মোস্তফা নামের কেউ ডিবি পুলিশে যোগদান করেনি। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
কালীগঞ্জ থানায় কর্মরত থাকাকালীন গত বছরের ১৬ জুলাই মদ্যপ অবস্থায় এলাকাবাসীর হাতে গণপিটুনির শিকার হন এএসআই মোস্তফা। এনিয়ে পরদিন বিভিন্ন দৈনিকে একটি সংবাদও প্রকাশ হয়।
১৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম