নিউজ ডেস্ক : প্রায় ছয় মণ ওজনের ৬০ হাজার টাকার ধাতব মুদ্রা (কয়েন) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম খবির (৪৫)। ১০ বছর ধরে ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, ১ টাকা ও ২ টাকার ধাতব মুদ্রা জমিয়েছেন তিনি। এ সব মুদ্রা সরকার বাতিল না করলেও খরিদ্দাররা নিতে চান না। কার্যত অচল এই বিপুল পরিমাণ কয়েন এখন তিনি কী করবেন বুঝতে পারছেন না।
জানা যায়, খবিরের বাড়ি উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে। তিনি সবজি ব্যবসায়ী। খবির জানান, তিনি ২৫ বছর ধরে উপজেলা সদর বাজারে সবজির ব্যবসা করছেন। গত ১০ বছর তিনি কয়েনগুলো অনিচ্ছা সত্ত্বেও জমিয়েছেন। হিসাব করে দেখা গেছে কয়েনের ওজন প্রায় ৬ মণ এবং এর অর্থমূল্য ৬০ হাজার টাকার বেশি। এক সময় ক্রেতারা সবজির দাম হিসেবে তাকে কয়েন দিয়েছেন, তিনিও নিয়েছেন এবং ধীরে ধীরে সেগুলো জমিয়েছেন। তখন ভাবতে পারেননি কয়েনগুলো আর চলবে না।
ব্যবসায়ী খাইরুল বলেন, অনেক দরিদ্র মানুষ ও ভিক্ষুকেরা কয়েন দিয়ে সবজি কিনেছেন। আমি মুখের উপর তাদের না বলতে পারিনি। তাদের ফিরিয়ে দিতে পারিনি। অনেক জায়গায় ঘুরেও কয়েনগুলো চালাতে পারিনি। কোনো ব্যাংকও এই বিপুল পয়সা আর নিতে চায় না।
এখন খাইরুলের ছোট্ট বসত ঘরে প্লাস্টিকের বড় চারটি বালতি আর দুই বস্তা বোঝাই শুধু কয়েন আর আর কয়েন। একসময় কয়েনগুলো বাজারে রাখলেও এখন বাড়িতে এনে রেখেছেন।
আ'ক্ষেপ করে খবির বলেন, ব্যবসার পুঁজির তিনের দুই ভাগই এখন কয়েনের মধ্যে আ'টকে আছে। দুই ছেলে-মেয়ে স্ত্রীসহ চার সদস্যের পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। যদি এই কয়েনগুলোর বিনিময় মূল্য দিতো তাহলে আমার অনেক উপকার হতো।
মহম্মদপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোফাজ্জেল হোসেন মোল্যা বলেন, খবিরের কয়েন নিয়ে বিপাকে থাকার বিষয়টি আমরা জানি। লেনদেনে ধাতব মুদ্রার ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে। তারপরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। মাগুরা সোনালী ব্যাংকের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) রশিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ন'জরে আনবেন।