বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬, ০২:৪৬:৩৭

চুরি হওয়া গরু ফেরত পেতে যা যা করতে হলো

চুরি হওয়া গরু ফেরত পেতে যা যা করতে হলো

মাগুরা: চুরি যাওয়া দুটি গরু থানা-পুলিশের হেফাজত থেকে ফেরত পেতে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার এক প্রান্তিক চাষি চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নির্দেশে দুদিন পর গরু দুটি ফেরত পেলেও তিনি ‘পদে পদে হয়রানি ও অর্থদণ্ডের’ কথা ভুলতে পারছেন না। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহম্মদপুরের নহাটা ইউনিয়নের শালধা গ্রামের মনোরঞ্জন রায়ের দুটি গরু গত সোমবার রাতে নিজ বাড়ির গোয়ালঘর থেকে চুরি হয়। পরদিন সকালে শালধার পাশের গ্রামের লোকজন শালিখা উপজেলার সীমাখালী গ্রামের লিটন মুন্সী (১৮) নামে এক সন্দেহভাজন চোরকে চুরি হওয়া গরু একটি নছিমনসহ আটক করে পুলিশে দেন।


মনোরঞ্জন রায় জানান, খবর পেয়ে তিনি মঙ্গলবার সকালে নহাটা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে যান। গিয়েই বাধে বিপত্তি। গরু দেওয়ার কথা বলে তাঁকে দুপুর পর্যন্ত ফাঁড়িতে বসিয়ে রাখা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, ফাঁড়ির উপপরিদর্শক কবির হোসেন তাঁর কাছ থেকে কিছু টাকা নেন। এসআই তাঁকে বলেন, গ্রামের লোকজনের মারধরে চোর আহত হয়েছে। তার চিকিৎসার খরচ তাঁকেই (মনোরঞ্জন রায়কে) দিতে হবে। শুধু তাই নয়, গরু ও চোরের সঙ্গে তাঁকে ১৫ কিলোমিটার দূরে মহম্মদপুর থানায় যেতে হবে।


মনোরঞ্জন রায় বলেন, ‘দারোগার কথামতো মহম্মদপুর থানায় যাই। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। গরুর সঙ্গে আমাকে অভুক্ত অবস্থায় থানায় বসে থাকতে হয়। তারপরও গরু নিয়ে বাড়ি ফিরব বলে বসে থাকি। সন্ধ্যার পর আমাকে দিয়ে মামলা করানো হয়। তারপরও গরু ফেরত দেওয়া হয়নি। বরং আমাকে বলা হয়, আদালতের মাধ্যমে গরু নিতে হবে। গরু পুলিশের হেফাজতে থাকবে। যত দিন গরু পুলিশ হেফাজতে থাকবে, তত দিন আমাকে গরুর খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পরে হতাশ হয়ে রাতে থানা থেকে বাড়ি ফিরি।’ পরে গতকাল বুধবার আদালতের এক আদেশে অবশেষে গরু ফিরে পেয়েছেন মনোরঞ্জন রায়।

গতকাল বিকেলে তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘যত আইন গরিবের জন্য। পুলিশকে টাকা দিলাম। উকিলের পেছনে টাকা গেল। যাতায়াতে খরচ হলো। দুদিন ঘুরলাম। চরম হয়রানি হলাম। অথচ চুরি হওয়া গরু ধরছে জনগণ। গরু ফাঁড়িতে না দিয়ে আমাকে দিলে এবং চোরকে ছেড়ে দিলে কোনো ভোগান্তিই পোহাতে হতো না। এ জন্যই মানুষের থানা-পুলিশে ভয়। পদে পদে হয়রানি, অর্থদণ্ড আর ভোগান্তির কথা আমি ভুলতে পারছি না।’ সর্বশেষ গতরাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত তিনি গরু হাতে পাননি। মহম্মদপুর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম গতকাল বিকেলে বলেন, ‘পুলিশকে আইনিপ্রক্রিয়া মেনে কাজ করতে হয়। এ জন্য কেউ ভোগান্তিতে পড়লে আমাদের কিছু করার থাকে না।-প্রথম আলো

১৬ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে