মাগুরা : চুরি যাওয়া দুটি গরু থানা-পুলিশের হেফাজত থেকে ফেরত পেতে থানায় দিন কাটে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার এক গরিব চাষির। তিনি চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
আদালতের নির্দেশে দুদিন পর গরু দুটি ফেরত পেলেও পদে পদে হয়রানি ও অর্থদণ্ডের কথা ভুলতে পারছেন না তিনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহম্মদপুরের নহাটা ইউনিয়নের শালধা গ্রামের মনোরঞ্জন রায়ের দুটি গরু গত সোমবার রাতে নিজ বাড়ির গোয়ালঘর থেকে চুরি হয়। পরদিন সকালে শালধার পাশের গ্রামের লোকজন শালিখা উপজেলার সীমাখালী গ্রামের লিটন মুন্সী (১৮) নামে এক সন্দেহভাজন চোরকে চুরি যাওয়া গরু, একটি নছিমনসহ আটক করে পুলিশে দেন।
মনোরঞ্জন রায় জানান, খবর পেয়ে তিনি মঙ্গলবার সকালে নহাটা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে যান। গরু দেয়ার কথা বলে তাকে দুপুর পর্যন্ত ফাঁড়িতে বসিয়ে রাখা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, ফাঁড়ির এক উপপরিদর্শক তার কাছ থেকে কিছু টাকা নেন। তিনি তাকে বলেন, গ্রামের লোকজনের মারধরে চোর আহত হয়েছে। তার চিকিৎসার খরচ তাকেই দিতে হবে। গরু ও চোরের সঙ্গে তাকে ১৫ কিলোমিটার দূরে মহম্মদপুর থানায় যেতে হবে।
মনোরঞ্জন রায় বলেন, দারোগার কথামতো মহম্মদপুর থানায় যাই। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। গরুর সঙ্গে অভুক্ত অবস্থায় থানায় বসে থাকতে হয়। তারপরও গরু নিয়ে বাড়ি ফিরব বলে বসে থাকি। সন্ধ্যার পর আমাকে দিয়ে মামলা করানো হয়।
তিনি বলেন, তারপরও গরু ফেরত দেয়া হয়নি। আমাকে বলা হয়, আদালতের মাধ্যমে গরু নিতে হবে। গরু পুলিশের হেফাজতে থাকবে। যতদিন গরু পুলিশ হেফাজতে থাকবে, ততদিন গরুর খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর হতাশ হয়ে রাতে থানা থেকে বাড়ি ফিরি।
গতকাল বুধবার আদালতের এক আদেশে গরু ফিরে পেয়েছেন মনোরঞ্জন রায়। গতকাল বিকেলে তিনি দুঃখ করে বলেন, যত আইন গরিবের জন্য। পুলিশকে টাকা দিলাম। উকিলের পেছনে টাকা গেল। যাতায়াতে খরচ হলো। দুদিন গরুর জন্য ঘুরলাম। অথচ চুরি হওয়া গরু ধরছে জনগণ। গরু ফাঁড়িতে না দিয়ে আমাকে দিলে এবং চোরকে ছেড়ে দিলে আমাকে ভোগান্তি পোহাতে হতো না। এ জন্য মানুষ থানা-পুলিশে ভয়। পদে পদে হয়রানি, অর্থদণ্ড আর ভোগান্তি।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশকে আইনিপ্রক্রিয়া মেনেই কাজ করতে হয়। এ জন্য কেউ ভোগান্তিতে পড়লে কিছু করার নেই।
১৬ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম