মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম ভুলন দাস (৩২), বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারে।
‘আর মাত্র ২ মিনিট পরে আমি চিরদিনের জন্য চলে যাচ্ছি। তুমি সুখে থাকিও।’ মোবাইল ফোনে স্ত্রীকে একথা বলেই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন ভুলন দাস। ২/৪ মিনিটের ব্যবধানে স্ত্রী আবার ফোন করেন স্বামীর মোবাইলে। জানতে চান তার স্বামী কোথায়? কিন্তু ততক্ষণে স্বামীর দেহের উপর দিয়ে চলে গেছে দ্রুতগামী ট্রেন।
রেললাইনের ভেতর ও বাইরে পড়েছিল খণ্ডবিখণ্ড দেহ। স্বামীর এই নির্মম পরিণতি শুনে মোবাইলের অপরপ্রান্তে থাকা স্ত্রীও মুর্ছা যান।
গত ২০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় কুলাউড়া উপজেলার পৌর এলাকার বিহালা গ্রামের কাছে রেললাইনে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, ভুলন দাস (৩২) নামক ওই যুবক সিলেট থেকে ঢাকাগামী ট্রনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।
মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে রেলওয়ে পুলিশ পরিবারের লোকজনের কাছে খবর দেয়। রাত ৮টায় মরদেহ উদ্ধার করে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে শুক্রবার সকালে নিহত ভুলনের স্ত্রী জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে এলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ।
রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান-‘পারিবারিক কলেহের জের ধরে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন-‘ট্রেন লম্বা হুইছেল বাজালেও ভুলন দাস রেললাইন থেকে সরেননি।’ লাইনের পাশে চাদরের উপরে নিজের মোবাইল ও সঙ্গে থাকা টাকা আলগা করে রাখা ছিল বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
সিলেট জেলার বিয়ানী বাজার উপজেলার বাসিন্দা মৃত খোকন দাসের ছেলে ভুলন দাস। তিনি পেশায় একজন পল্লীচিকিৎসক। বর্তমানে বিয়ানী বাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের দুবাগ বাজারে ডক্টর্স চেম্বার নামে তার একটি নিজস্ব ফার্মেসি রয়েছে। যেখানে বসে তিনি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতেন। বছর দুয়েক আগে বিয়ে করেন তিনি। স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা।