মৌলভীবাজার থেকে : শনিবার রাত ১টার দিকে অপরিচিত নম্বর থেকে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে জহিরুল ইসলাম নামের একজন কাঁদতে কাঁদতে জানান, এক প্রাইভেট কার চালক তার ভাগ্নিকে (১৮) অ'পহ'রণ করেছে।
ঘটনার বিবরণে জহিরুল বলেন, তার বোনজামাইয়ের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দিনাপুর গ্রামে এবং তার বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভৈরবগঞ্জ এলাকায়। বোনজামাই খুব অ'সুস্থ তাই দুই দিন আগে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বোনজামাইয়ের সাথে তার ভাগ্নিও হাসপাতালে ছিলেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে ক্লান্ত ভাগ্নিকে নিজের বাড়িতে (ভৈরব বাজারে) চলে যেতে বলেন জহিরুল। রাত দশটার দিকে ভাগ্নিকে একটি গাড়িতে তুলে দেয়ার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের গেটে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এমন সময় একটা প্রাইভেট কার আসে।
প্রাইভেট কার চালক ভৈরব বাজারের দিকে যাবে বলে জানায়। কারটি থামে এবং ড্রাইভার জানান তিনি লোকাল যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় গাড়ির পেছনে একজন বসা ছিলেন। ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে ভাগ্নিকে প্রাইভেট কারে তুলে দিয়ে হাসপাতালে বোন-জামাইয়ের কাছে ফিরে যান জহিরুল।
কিছু সময় পর মেয়েটির নম্বর থেকে জহিরুলের কাছে কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে ‘আমাকে বাঁ'চাও, ড্রাইভার আমাকে নামিয়ে দিচ্ছে না, আমাকে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে’- এসব বলে চিৎকার করতে থাকে মেয়েটি।
এ সময় মামা জহিরুলকে লাইনে রেখেই মেয়েটা বলতে থাকেন, ‘আল্লাহর দোহায় আমাকে নামিয়ে দেন, আমার আব্বা হাসপাতালে মা'রা যাবে যদি আমার কিছু হয়’। এর পরপর লাইন কেটে যায় এবং মেয়েটির নম্বর বন্ধ হয়ে যায়।
জহিরুল ইসলাম কিং'কর্ত'ব্যবি'মূঢ় হয়ে সব দিকে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এমন সময় উনার পরিচিত একজন সাংবাদিককে ঘটনাটি জানান জহিরুল। ঘটনার বিবরণ জানার পর মধ্যরাতে বিষয়টি মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পু'লিশ সুপার রাশেদুল ইসলামকে জানান।
তিনি বিষয়টি জেনে সঙ্গে সঙ্গে ভুক্তভোগীর সাথে যোগাযোগ করে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। মধ্যরাতেই শুরু হয় অভিযান। প্রায় ৩ ঘণ্টার অ'ভিযানে (রাত ৪টার দিকে) কমলগঞ্জ উপজেলায় দেওড়াচরা চা বাগান থেকে মেয়েটিকে অ'ক্ষ'ত অবস্থায় উ'দ্ধা'র করে পু'লিশ। এ সময় গাড়িটি আ'ট'ক করা গেলেও, চারজন অ'পহ'র'ণকারী পালিয়ে যায়। তাদের ধরতে পু'লিশের অ'ভিযান অব্যাহত আছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, মেয়েটির ভাগ্য ভাল যে ঠিক সময় তথ্য পেয়েছিলাম। ঘটনাস্থলের আলামত দেখে বুঝতে পারছি থাকে ধ'র্ষ'ণের উদ্দেশ্যে তারা চা বাগানে নিয়ে এসেছিল। প্রথমে গাড়িতে দুজন থাকলেও পরে আরও দুজন যুক্ত হয়। চারজন মিলে মেয়েটিকে ধ'র্ষ'ণ করে হয়তো মেরে ফেলত।
পুলিশের গাড়ির উপস্থিতি বুঝতে পেরে চার অ'প'রাধী পালিয়েছে তবে প্রাইভেট কারটি আ'ট'ক করা হয়েছে। মেয়েটিকে সম্পূর্ণ অ'ক্ষ'ত অবস্থায় উ'দ্ধার করা গেছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আ'ট'ক করা হবে। এ ঘটনায় সকালে মামলা হবে বলে জানান তিনি।
রাশেদুল ইস'লাম আরও জানান, উ'দ্ধারের পর মে'য়েটি জানিয়েছে, তিনি বাঁচার জন্য প্রচুর চিৎকার করেন। কিন্তু নির্জন স্থান হওয়াতে তা কারও কানে পৌঁছায়নি।