নড়াইল : নড়াইলের প্রাণকেন্দ্র মুচিরপুল (রুপগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড) এলাকার প্রায় আড়াইশ’ বছরের পুরোনো পাকড় গাছটি কেটে ফেলা হলো। গত রবিবার রাতভর প্রবল বর্ষণের কারণে রাতে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর গাছটি হেলে পড়েছিল। এতে মানুষের প্রাণহানি না ঘটলেও কয়েকটি দোকানঘর ও বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
গত সোমবার সকালে এলাকার ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার কারণে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধায়নে পাকড় গাছটি কাটার কাজ শুরু করেছে। গাছ কাটা শেষ করতে আরও দু-একদিন লাগবে বলে জানান জেলা পরিষদ প্রশাসক সুবাস চন্দ্র বোস।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে প্রবল বর্ষণের ফলে পাকড় গাছটি হেলে পড়তে শুরু করলে গাছটির নিচে থাকা দোকানসহ কয়েকটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সেখানে থাকা বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদ্যুৎ লাইন।
পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গাছটি কাটার জন্য নড়াইল পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের কাছে আবেদন করলে তিনি গাছের মালিক জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসকে বিষয়টি জানান। গাছ কাটার খরচ বাবদ ৮০ হাজার টাকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে পৌরসভার কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটুর নির্দেশে গাছ কাটার কাজ শুরু করা হয়।
মুচিরপুল এলাকার ব্যবসায়ী উজ্জল রায়, বিপুল কুমার দাশ, কুমারেশ দেবনাথ বলেন, আমরা প্রায় ৪০-৪৫ বছর ধরে এ গাছের নিচে ব্যবসা করে আসছি । কিন্তু সম্প্রতি এ গাছটি আস্তে আস্তে দোকানের ওপর হেলে পড়ছিল। গত রবিবার রাতে বর্ষায় গাছটি কয়েকটি দোকানের ওপর হেলে পড়ে। গাছটি কাটা না হলে যেকোনও সময় মানুষের প্রাণহানিসহ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হতো।
এদিকে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের কাছে এ গাছটির গুরত্ব ছিল সর্বাধিক।এ ধর্মের অনুসারী অনেক নারী-পুরুষ গাছের নিচে পূজা-অর্চনা করতেন।
পৌর কমিশনার শরফুল আলম লিটু বলেন, অনেক বছর ধরে এ গাছটি রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির কারণে আর রক্ষা করা হলো না ।
জেলা পরিষদ প্রশাসক সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, গাছটি কাটার পক্ষে আমরা ছিলাম না। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাছটির গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। বাড়ি, দোকান ও মানুষের ঝুঁকির কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২৫ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম