নিউজ ডেস্ক : রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের খালাতো দুই ভাই মারা গেছেন। প্রতিমন্ত্রীর ওই দুই ভাই হলেন নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের চাঁদপুর মহল্লার আলহাজ আব্দুর রহিমের ছেলে আলহাজ আবুল কালাম আজাদ ওরফে নজু (৫০) ও আলহাজ গোলাম কিবরিয়া (৬২)।
একই দিনে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। মাত্র ৬ ঘন্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের লাশ কাঁধে নেওয়ার যন্ত্রণা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না পলক।
পলক,এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘একদিনে দুই ভাইয়ের লাশের ভার বইতে হলো! রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকে প্রিয়ন্ত, টিটু, মিঠু, কলিনের সাথে সার্বক্ষণিক কথা হচ্ছিল। হাসপাতালের ডিরেক্টর নজু ভাইকে ভর্তি করার সময় থেকেই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছিলেন। তারপর কিবরিয়া ভাইকেও নিতে হলো একই হাসপাতালে। ভোরবেলা যখন নজু ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সিংড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম তখনও কিবরিয়া ভাই ছিলেন সিসিইউতে। মিঠু সিংড়ায় নজু ভাইয়ের জানাজা, দাফনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। টিটু আর কলিন রাজশাহীতে কিবরিয়া ভাইয়ের সাথে।’
পলক বলেন, ‘‘নাটোর পৌঁছানোর আগেই প্রথমে টিটু, একটু পরেই কলিনের ফোনকল- ‘চাচা, আব্বু নাই!’ আমার নিজেরই বাকরুদ্ধ হয়ে আসছিল। ওদেরকে তবু সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা। সিংড়া এসে সরাসরি নজু ভাইয়ের বাড়িতে। প্রিয়ন্তর নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকানো যায় না। বাদ জোহর নজু ভাইয়ের জানাজা সম্পন্ন করলাম। বালুয়াবাসুয়া কবরস্থানে দাফন করা হলো নজু ভাইকে। নিজের ছোট ছেলেকে চিরবিদায় জানিয়ে বড় ছেলের লাশের অপেক্ষায় আমার খালা।’’
তিনি আরো বলেন, ‘কিবরিয়া ভাইয়ের এর আগেও স্ট্রোক হয়েছিল। সে যাত্রায় মহান আল্লাহ্ পাকের ইচ্ছায় আবার সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন আমাদের মাঝে। এবারে আর রক্ষা হলো না। নজু ভাই দিব্যি সুস্থ স্বাভাবিক ছিলেন। কিছু বুঝে উঠার সময়ও দিলেন না। মাত্র ৬ ঘন্টার ব্যবধানে ২ ভাইয়ের লাশ আমার কাধেই ভারী হয়ে গেল। তাদের নিষ্পাপ সন্তানদের কি সান্তনা দিব ? খালাতো ভাই হলেও আমাদের সম্পর্ক আপন ভাইয়ের থেকে কিছু কম ছিল না। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক জীবনে কিবরিয়া ভাই ছিলেন আমার অন্যতম একজন অভিভাবক। নজু ভাই রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। কত স্মৃতি, কত সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি। সব স্মৃতি পেছনে ফেলে দুইজনই আজ চিরবিদায় নিলেন।’
প্রতিমন্ত্রী দুই ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, ‘মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমার ভাইদের জান্নাতবাসী করেন। পরিবারের সবাইকে যেন এই শোক সইবার শক্তি দেন। সবাই কিবরিয়া ভাই এবং নজু ভাইয়ের জন্য দোআ করবেন।’