নাটোর: মানুষের বৃদ্ধা হওয়াটাই যেন সবচেয়ে বড় অপরাধ? আমার ঘর-সংসার, ছেলেমেয়ে সব থাকার পরও আজ আমি বড় অসহায়। জায়গা-জমি সব লিখে দিয়েছি। ঘরবাড়ি সব কিছু নিয়ে মুখে লাথি মেরে ফেলে দিল। পেটের ছেলে এইভাবে মারবে, মেনে নেওয়া যায় না। আমার বাপ, মা, ভাই, কেউ নেই। তাই বিচারের আশায় এই থানার সামনে সকাল থেকে বসে আছি।
শুক্রবার দুপুরে এই কথাগুলো বলছিলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলা কুষাবাড়ী গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা রহিমা বেওয়া।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কুষাবাড়ী রহিমা বেওয়া প্রায় ১০ বছর আগে তার স্বামীকে হারান। এরপর থেকেই তার সাত ছেলেমেয়ের পরিবারে সঙ্গে জীবনযাপন করতে থাকেন তিনি। সম্প্রতি মেঝ ছেলে বেল্লাল হোসেন একটু বেশি আদরে হওয়ায় তাকে জমি-জমা ও ঘরবাড়ি লিখে দেন। আজ সকাল ৭টায় ছেলের কাছে টাকা চাইলে মায়ের মুখে লাথি মেরে ফেলে দেন ছেলে বেল্লাল হোসেন। গ্রাম্য প্রধানদের সামনেই মাকে করা হয় মারপিট।
এদিকে থানার সামনে মাটিতে বসে একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা নারীকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিংড়া উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় বিষয়টি সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামকে বিষয়টি জানানো হয়।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিংড়া উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধা মায়ের মুখে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া দুঃখজনক বিষয়। ওই বৃদ্ধা নারীকে সহযোগিতা করার জন্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা পাশে রয়েছেন।
সিংড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, কোনো ছেলে তার মায়ের মুখে লাথি মেরে ফেলে দিতে পারে না। ছেলে বেল্লাল হোসেনকে আটক করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। -দৈনিক আমাদের সময়