নাটোর: লেখাপড়ার এক অদম্য ইচ্ছে নিয়ে মাসুমা খাতুন নামে এক নারী তার মেয়ের সাথেই একসাথে করেছেন এসএসসি পাশ। এবার সেই মেয়ের সঙ্গে একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। ১৯৯৭ সালে তার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার আগেই পরিবার থেকে তার বিয়ে দেয়া হয়। এরপর আর পরীক্ষা দিতে পারেননি। এগোয়নি পড়াশোনা।
মাসুমা খাতুনের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়ায়। তিনি বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা বিএম কলেজ থেকে চলতি বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন। আর তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে রাজশাহী সিটি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
মাসুমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহি (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মজিদ বলেন, আমার জন্য একটু কষ্ট হলেও আমি তার ইচ্ছার মর্যাদা দিয়েছি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।
মাসুমা খাতুন বলেন, বিয়ের পর ১৮ বছর পেরিয়ে গেছে। পিঠাপিঠি দুই ছেলে-মেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবারই সময় পাইনি। অবশেষে ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছি। সমাজে আর দশটা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে পরিচয় দিতে পারি, সে কারণেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করছি।
কেন্দ্র সচিব শরিফ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, তার কেন্দ্রে উদ্যোমী মা মাসুমা খাতুন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার মেয়েও চলতি বছর একই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে তিনি জেনেছেন।