সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২, ১০:২৫:৪৬

বাবা ও ছেলের একসঙ্গে এসএসসি পাস!

বাবা ও ছেলের একসঙ্গে এসএসসি পাস!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সেই বাবা-ছেলে পাস করেছেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে তারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

বাবা ইমামুল ইসলাম পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ৭৯ এবং ছেলে আবু রায়হান পেয়েছে জিপিএ ৪ দশমিক ৮২। বাবা ইমামুল ভোকেশনাল শাখার ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের এবং ছেলে রায়হান একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ট্রেডের ছাত্র।

ভালো ফল করায় তাদের বাহবা দেন সহপাঠী ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। তাদের বাড়ি উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চকতকিনগর গ্রামে। পাসের পর উচ্ছ্বসিত বাবা ইমামুল ইসলাম বলেন, তিনি পড়ালেখা চালিয়ে যাবেন। ছেলের বক্তব্য, বাবাও পাস করায় আমি খুবই আনন্দিত।

এদিকে বাবা ও ছেলের একসঙ্গে পাসের খবরে অভিনন্দন জানিয়েছেন তার প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোছা. সামসুন্নাহার। তিনি তাদের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, পড়ালেখা বন্ধের দীর্ঘ ২৪ বছর বাবা ইমামুল ছেলের সঙ্গে স্কুলে ভর্তি হয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ওই সময় বাবা ইমামুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সংসারের অভাব অনটনের কারণে অষ্টম শ্রেণি পাসের পরে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। পড়ালেখা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ২৪ বছর আগে তিনি ঢাকায় পাড়ি জমান। সেখানে প্রায় ১৮ বছর গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করেন। ২০১৬ সালে সেই কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে জমানো টাকা দিয়ে গ্রামে এসে মৌসুমে আমের ব্যবসা শুরু করেন।

পাশাপাশি বাড়ির পাশে একটি ছোট্ট মুদির দোকান দেন; কিন্তু বুকের ভেতরে লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট মাঝে মধ্যেই তাকে পীড়া দিত। লোকলজ্জায় পড়ালেখা হয়ে উঠছিল না। সমাজে আর ১০টা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যেন পরিচয় দিতে পারেন সেই উদ্দেশ্যেই পারিবারিক সিদ্ধান্তে অবশেষে ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে