নীলফামারি: নীলফামারির ডিমলা উপজেলার সাবেক সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা এইচ এম গোলাম কিবরিয়ার চাকরির শুরু থেকে অবসরকালীন পর্যন্ত সকল বেতন ফেরত দেয়া সংক্রান্ত ভূমি অধিদফতরের নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রিট খারিজ করার ফলে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী সেজে অবসরে যাওয়া ওই কর্মকর্তাকে চাকরি জীবনের সময় বেতন-ভাতা এখন ভূমি অধিদফতরে জমা দিতে হবে বলে জানান আইনজীবীরা।
রিটের ওপর জারি করা রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিট খারিজ করে নোটিশের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম বায়েজিদ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শামীম হোসেন।
এর আগে গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী সেজে সহকারী সেটেলমেন্ট পদে চাকরি গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। তবে ততদিনে সাবেক এই কর্মকর্তা চাকরি থেকে অবসরে (পিআরএল) যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের বিষয়ে জবাব চেয়ে ২০১৭ সালের ১ মে ভূমি, রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক একটি নোটিশ দেন।
পরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্তে ওঠে আসে, গোলাম কিবরিয়া ১৯৭১ সালে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন এবং তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়োগের সময় যা উল্লেখ করা হয় তা মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার ৮ থেকে ১০ বছর পর অর্জিত হয়েছে।
তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৮ জুন ভূমি, রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর থেকে আরেকটি নোটিশের মাধ্যমে অবৈধভাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী সেজে সহকারী সেটেলমেন্ট চাকরি করা এ এইচ এম গোলাম কিবরিয়াকে চাকরি জীবনের শুরু (১৯৮৫ সালের ২৫ নভেম্বর) থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বেতন-ভাতাদি সরকারি কোষাগারে বলা হয়।
কিন্তু অধিদফতরের সে নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গোলাম কিবরিয়া হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট হাইকোর্ট নোটিশটির কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং এর বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেন।
তবে সে রিট খারিজের ফলে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের আর কোনো বাধা থাকবে না এবং চাকরি থেকে প্রাপ্ত সকল বেতন-ভাতাদি সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।