রবিবার, ০৩ মার্চ, ২০১৯, ০৮:০০:১০

স্কুলছাত্রী সুমিকে বাড়ির গোসলখানায় একা পেয়ে ধর্ষণ চেষ্টা, লজ্জা ও আতঙ্কে আত্মহত্যা

 স্কুলছাত্রী সুমিকে বাড়ির গোসলখানায় একা পেয়ে ধর্ষণ চেষ্টা, লজ্জা ও আতঙ্কে আত্মহত্যা

নীলফামারী: নবম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী সুমি রাণী। ক্লাসের যে কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়ালেখাকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিল, সুমি রাণী তাদের অন্যতম। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। সম্প্রতি এক বখাটের কুনজর পড়ে সুমির (১৪) উপর। নিজের বাড়ি ও স্কুলে যাওয়া আসার রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে সুমিকে উত্যক্ত করতো এই বখাটে যুবকের। অভিযুক্ত বখাটের নাম সূর্য রায় (৩৫)।

সর্বশেষ শনিবার সুমিকে বাড়ির গোসলখানায় একা পেয়ে ধর্ষণ চেষ্টা করে লম্পট সূর্য। একপর্যায়ে সুমির ভাই এসে লম্পটের হাত থেকে তাকে রক্ষা করলেও পরে লজ্জায় ও আতঙ্কে গলায় আত্মহত্যা করে সে। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে। নিহত সুমি ওই ইউনিয়নের ভুজারীপাড়ার দিনমজুর হরেন চন্দ্র রায়ের কন্যা। সে বাঙ্গালীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।

এদিকে অভিযুক্ত বখাটে সূর্য রায় একই গ্রামের বাসিন্দা। সে দুই সন্তানের জনক এবং পেশায় একজন ইজিবাইক চালক বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ২ মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিহত স্কুলছাত্রী সুমির মা ময়না রাণী বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

নিহত স্কুলছাত্রী সুমির পরিবারের সদস্যরা জানায়, শনিবার বিকেলে বাড়ি এসে গোসলখানায় গোসল করতে যায় সুমি। এসময় তাকে বাড়িতে একা পেয়ে গোসলখানায় সুমিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বখাটে সূর্য। একপর্যায়ে সুমির পালিত ভাই বকুল চন্দ্র বাড়িতে এলে বখাটে সূর্য রায় পালিয়ে যায়।

এসময় সূর্যকে আটক করার জন্য সুমির ভাই বকুল চন্দ্র বাড়ির বাইরে আসে। এরই ফাঁকে লজ্জা ও আতঙ্কে সুমি নিজ শোয়ার ঘরে গিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।

নিহত সুমির মা ময়না রাণী জানান, দীর্ঘদিন থেকে তার মেয়ে সুমিকে উত্যক্ত করতো বখাটে সূর্য। এ উত্যক্ত করার ঘটনা ইতোপূর্বে সূর্য ও তার পরিবারকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেনি।

প্রতিবেশী শিল্পী রাণী ও সুমীর পিসি জোসনা রাণী জানান, বখাটে ও লম্পট চরিত্রের সূর্য অনেক দিন থেকেই সুমিকে উত্যক্ত করে আসছে। স্কুলে যাওয়ার পথে প্রায়ই সে সুমির হাত ধরে টানা হেচড়া করতো। আমরাও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা দেখেছি। কিন্তু সূর্যকে তার পরিবারের লোকজন বাধা না দেয়ায় সে আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল বলেন, হত্যার মামলায় ৩০৬ ধারায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করার জোর চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে আসামী একজন লম্পট চরিত্রের বলে জানা গেছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে