পঞ্চগড় থেকে : ভিডিওর ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ৪ দিনেও মামলা নেয়নি তেঁতুলিয়া থানা পুলিশ। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, মোটা অংকের লেনদেনের কারণে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
উল্লেখ্য, তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী রহিমা আক্তার সোনিয়া ১০ অক্টোবর সকালে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওয়ার্ড বয় রাজন (৩২) ও বাশির উদ্দিনের ছেলে আতিকুর রহমানের (৩৪) ভিডিওর ফাঁদে পড়ে সোনিয়া এ পথ বেছে নেয়।
এদিকে সোনিয়ার ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং ফেসবুকে ক্ষোভ, প্রতিবাদ এবং আসামিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ঝড় উঠলেও আসামি গ্রেফতার এবং মামলা রেকর্ডের ব্যাপারে পুলিশ নির্লিপ্ত রয়েছে।
সোনিয়ার পরিবারের লোকজন বলছেন, রাতারাতি আসামিদের সঙ্গে পুলিশের মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে। প্রধান আসামি পঞ্চগড় ২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয় হওয়ার কারণেও পুলিশ এ ভূমিকায় রয়েছে। এসব কারণে পুলিশের উপর ফুঁসে উঠছেন এলাকাবাসী।
ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, যে কোনো সময় বিক্ষুব্ধ মানুষ বিস্ফোরিত হতে পারেন। এ ব্যাপারে সোনিয়ার দাদা রবীন্দ সংগীত সম্মিলন পরিষদের জেলা সভাপতি আবদুল হান্নান বলেন, ‘পুলিশ সুপারের কাছে গেছি। তিনি মামলা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু ৪ দিনেও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ।’
তিনি বলেন, ‘লোকমুখে শুনেছি, কয়েক লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে । তাই পুলিশ আসামিদের কাওকেই গ্রেফতার করছে না। রবিবার সোনিয়ার সহপাঠী, এলাকাবাসীসহ তেঁতুলিয়ার আপামর জনগণ এর প্রতিবাদে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন। মানববন্ধন যাতে না করা হয়— সে জন্যও চাপ প্রয়োগ করছে প্রভাবশালী মহল।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘দুই যুবক প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সোনিয়াকে অত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে, এটাতো পুলিশসহ সবার কাছে পরিষ্কার। তারপরও পুলিশের ভূমিকা আমাদের আহত করেছে। রবিবার মানববন্ধন করা হবেই।’
অন্যদিকে তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সরেস চন্দ বলেন, ‘যখন আমরা লাশ উদ্ধার করতে যাই, তখন পরিবারের কোনো অভিযোগ ছিল না। তারা পোস্টমর্টেমও করতে দিচ্ছিল না। আইনগত ভাবেই আমরা লাশ উদ্ধার করি। পরে একটি ইউডি মামলা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এখন নতুন করে মামলা নেওয়ার ব্যাপারে আইনি জটিলতা রয়েছে। তাহলে ইউডি মামলাটিকে খারিজ করে তারপর মামলা নিতে হবে। কিন্তু ইউডি মামলা খারিজ করার আইন নেই। তবে যে মামলাই হোক, এ ব্যাপারে পুলিশ যথাযথ ভূমিকাই পালন করছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই আমরা নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করব।’
এমটিনিউজ/এসবি