পঞ্চগড় : সন্তান প্রসবের মাত্র ঘণ্টাখানেক পরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আরজু বেগম নামের এক প্রসূতি। বুধবার পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে অ্যাম্বুল্যান্সে বসেই পরীক্ষায় অংশ নেন ওই শিক্ষার্থী।
আরজু বেগমের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বেংহাড়ি বনগ্রাম ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের হামিদুর রহমানের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আরজু বেগম পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী। দু’বছর আগে তার বিয়ে হলেও নিয়মিত লেখাপড়া করে যাচ্ছেন আরজু। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তিনটি পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। বুধবার ভোরে তার প্রসব বেদনা শুরু হলে পরিবারের লোকজন তাকে পঞ্চগড় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসে। দুপুর ১২টায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করেন।
দুপুর একটায় তার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবসা পরিচিতি পরীক্ষা ছিল। সন্তান প্রসবের এক ঘণ্টা পরই এই অদম্য শিক্ষার্থী অ্যাম্বুল্যান্সে বসেই পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা জানান। পরে পরিবারের লোকজন পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ প্রফেসর কানাই লাল কুণ্ডুকে বিষয়টি জানালে তিনি পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
পরীক্ষা গ্রহণে সার্বিক সহযোগিতা করেন পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হাসনুর রশিদ বাবু। প্রায় দুই ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্সে বসে পরীক্ষা দেন আরজু। তার মানসিক দৃঢ়তা দেখে খুশি পরিবারের লোকজনও।
আরজু বেগম বলেন, এটি আমাদের প্রথম সন্তান। এদিকে পরীক্ষাও চলছে। সব ভালোভাবেই হয়েছে। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আমাকে অ্যাম্বল্যান্সে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করেছে আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। পরের পরীক্ষাগুলোও আমি দিতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।