পঞ্চগড়: পঞ্চগড় উপজেলা সদরের হাড়িভাসা ইউনিয়নের মমিনপাড়া সীমান্ত থেকে ওমর ফারুক নামে বাংলাদেশি এক পুলিশ সদস্যকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নীলফামারী ৫৬ বিজিবির আওতাধীন ওই সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫৩ এর ৭ ও ৮ নং সাব পিলার এলাকা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে বিজিবি সূত্র জানিয়েছে।
সীমান্ত সূত্র ও স্থানীয়রা জানায়, রোববার রাত ৯টার দিকে একটি মোটরসাইকেলযোগে ফারুকসহ তিনজন মমিনপাড়া সীমান্তে যান। এ সময় মমিনপাড়া সীমান্তের বিপরীতে ভারতের সিপাইপাড়া মহল্লার ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে তাদের তর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে বাংলাদেশি ঘাগড়া বিবিজি ক্যাম্পের বিপরীতে ভারতের চানাকিয়া বিওপির বিএসএফ সদস্যদের খবর দেয় সেদেশের নাগরিকরা। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ভারতীয়রা ধাওয়া দিলে দুইজন পালিয়ে আসেন, তবে ফারুককে আটক করে বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেন ভারতীয়রা।
বিএসএফের কাছে আটক পুলিশ সদস্য ওমর ফারুক পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতে নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, মোশারফ হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যকে প্রায়ই ওই সীমান্তে দেখা যায়। তিনি ফারুকসহ অন্য দুইজনকে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে যান। মোশারফের বিরুদ্ধে ভারতীয় চোরাকারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ রয়েছে।
সীমান্তবর্তী গ্রাম মমিনপাড়ার কুলছুম বেগম বলেন, রাত ৮টার পর তিনজন ভারত সীমান্তে যায়। তাদের সঙ্গে ভারতীয় লোকদের ঝগড়া হয়। তখন তারা বিএসএফকে খবর দেয়। বিএসএফ এসে একজনকে ধরে নিয়ে যায় এবং দুজন পালিয়ে আসেন। রাতেই আমরা শুনেছি বিএসএফের হাতে আটক ব্যক্তি পুলিশ এবং যে দুজন পালিয়ে এসেছেন তাদের একজনও পুলিশ।
মমিনপাড়ার বাসিন্দা ও ঘটনাস্থলের পাশে বসবাসকারী আমিরুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই তিনজনকে ধাওয়া করে। তারা ওমর ফারুককে আটক করে এবং বাকিরা পালিয়ে যান। আটকের পর তাকে অনেক মারধর করে তারা। পরে বিএসএফ সদস্যরা এসে তাকে চানাকিয়া ক্যাম্পে নিয়ে যান।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আক্কাছ আহমদ বলেন, শুনেছি বিএসএফ কর্তৃক আটক পুলিশ সদস্য আদালতে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ওই সীমান্ত এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন বলে আমরা শুনেছি। তবে কারা ছিলেন এবং কেন সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিলেন এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছুই জানি না।
বিজিবি ঘাগড়া কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মো. রুহুল আমিন বলেন, আমরা এ ব্যাপারে স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি। তবে কে, কখন এবং কেন ভারতীয় সীমান্তে গেছেন আমরা জানতে পারিনি। আমরা বিএসএফের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা একজনকে আটকের কথা নিশ্চিত করেছেন। বিজিবির পক্ষ থেকে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক বা চিঠি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
তবে পঞ্চগড়ের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যকে বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে কি-না তা বিজিবির পক্ষ থেকে এখনো জানানো হয়নি। এক্ষেত্রে আমাদের কাছে নাম ও ছবি দিয়ে জানানোর কথা। তবেই আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারব। এ বিষয়ে আমরাও খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমরা সঠিকভাবে জেনে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।-জাগো নিউজ