সোমবার, ০৩ এপ্রিল, ২০১৭, ০১:৪৩:১৫

মার্কিন তরুণীর সঙ্গে ঢাকার সিএনজি চালকের প্রেম, তারপর বিয়ে: অতঃপর ২০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা

মার্কিন তরুণীর সঙ্গে ঢাকার সিএনজি চালকের প্রেম, তারপর বিয়ে: অতঃপর ২০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা

 

পটুয়াখালী থেকে:  ঢাকায় নজরুল ইসলাম নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন সানজিদা চৌধুরী (২০) নামের শারীরিক প্রতিবন্ধী আমেরিকান এক বাঙালি তরুণী।

বাবার সঙ্গে অভিমান করে পাঁচ মাস আগে বাংলাদেশে আসেন মার্কিন নাগরিক সানজিদা চৌধুরী। এরপর প্রেমে পড়েন বাংলাদেশি নাগরিক মো. নজরুল ইসলামের। ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়ের এক মাস না হতেই নজরুল ২০ লাখ টাকা, একটি মুঠোফোন, পাসপোর্ট ও এসএস কার্ড নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে তরুণীর অভিযোগ।

নজরুল সানজিদাকে বলেছিলেন তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলে। সে কথা মাথায় রেখে শারীরিক প্রতিবন্ধী সানজিদা ঢাকা থেকে বাসে করে গত বৃহস্পতিবার সকালে বাউফলে পৌঁছান। বর্তমানে তিনি বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. হানিফ সরদারের বাড়িতে আছেন।

ওই বাড়িতে আলাপকালে সানজিদা দাবি করেন, জন্মসূত্রে তিনি মার্কিন নাগরিক। তাঁর বাবার নাম আবদুল মোতালেব চৌধুরী। তাঁরা ফ্লোরিডার বাসিন্দা। সেখান থেকে অভিমান করে বাংলাদেশে এসে তিনি ঢাকার নিউ ডিওএইচএসে নিজেদের বাড়িতে ওঠেন। ২০০৫ সালে তাঁর মা মারা যান।

তাঁর বাবা সাত মাস আগে বাংলাদেশে এসে এক নারীকে বিয়ে করেন। ওই ঘটনা নিয়ে বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়। তিনি ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকায় আসেন। এরপর প্রেম করে নজরুলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ২৮ মার্চ সকালে নজরুল তাঁর মূল্যবান জিনিস নিয়ে চলে যান, আর কোনো যোগাযোগও করেননি।

সানজিদার ভাষ্য, তিনি বিয়ের কাবিননামায় নজরুলের বাবার নাম আলী হোসেন মাতব্বর এবং ঠিকানা দশমিনা উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের পূর্ব আলীপুরা গ্রাম লেখা দেখেন। তবে নজরুল তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর পরিবার বাউফল উপজেলার কালাইয়া গ্রামে থাকেন।

সে অনুযায়ী তিনি বাসে করে বৃহস্পতিবার বাউফলে পৌঁছে থানায় যান। পরে বাউফল থানা-পুলিশের পরামর্শে তিনি পাশের দশমিনা উপজেলার দশমিনা থানায় স্বামীর সন্ধানে যান। পুলিশের সহযোগিতায় ওই এলাকায় গিয়ে নজরুলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন জানিয়ে বলেন, যেকোনোভাবে তিনি তাঁর পাসপোর্টসহ মূল্যবান জিনিস ফেরত চান।

নজরুল ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরের সূত্র ধরে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, নজরুলের জন্ম ১৯৮০ সালের ৫ জানুয়ারি। ভোটের এলাকা দশমিনা উপজেলার পূর্ব আলীপুরা।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আযম খান ফারুকী বলেন, ‘যে ঠিকানার কথা বলা হচ্ছে, তা দশমিনা উপজেলার। এ কারণে তাঁকে দশমিনা থানায় পাঠানো হয়।’

দশমিনা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ঠিকানা নজরুলের শ্বশুরবাড়ির। তাঁর বাড়ি বাউফলের কালাইয়া গ্রামে। মূলত প্রতারণার জন্যই ওই মার্কিন তরুণীকে নজরুল বিয়ে করেছেন।’

সানজিদা এখন যে ইউপি সদস্যের বাড়িতে আছেন, সেই হানিফ সরদার বলেন, সানজিদার বাবা মোতালেব চৌধুরীর সঙ্গে বৃহস্পতিবারই তিনি ফোনে কথা বলেছেন। মেয়ের দুরবস্থার কথা জেনে তিনি বাংলাদেশে এসে মেয়েকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। মেয়েটির বাবা এলে পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁকে তাঁর জিম্মায় দেওয়া হবে।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম,জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে