নিউজ ডেস্ক : জিয়াউর রহমানের শাসনামলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যখন পুলিশি গ্রেফতার-নির্যাতনে দিশেহারা, তখন কর্মীদের গ্রেফতার ঠেকাতে লাইসেন্সড বন্দুক হাতে একাই দাঁড়িয়েছিলেন পটুয়াখালীর সাবেক সাংসদ হাবিবুর রহমান মিয়ার স্ত্রী মিসেস শামসুন্নাহার।
শুক্রবার ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তার (ভাবী) কথা স্মরণ করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন: ‘ছবিতে আমার পাশের ভদ্রমহিলার নাম মিসেস শামসুন্নাহার। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পটুয়াখালীর আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যারা জড়িত ছিলেন তাদের এই মানুষটিকে ভুলবার কথা নয়। তবে আমি নিশ্চিত বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই তাকে চিনবেন না। অথচ এক সময় তার বৈঠকখানাই ছিল স্হানীয় আওয়ামী রাজনীতির মূল কেন্দ্র। এখন হয়তো ঐ রাস্তা দিয়ে গেলেও বাড়িটির দিকে ফিরে তাকানোর সময় আমাদের হয়ে ওঠে না।
স্বামী মরহুম হাবিবুর রহমান মিয়া। পটুয়াখালীর রাজনীতিতে এ যাবতকালের জনপ্রিয়তার শীর্ষে যার অবস্থান। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন । এমপি হয়েছিলেন দলের দুঃসময় ১৯৭৯ সালে। আওয়ামীলীগ যখন সারা বাংলাদেশে ঊনচল্লিশটি আসন পেয়েছিল তখন পটুয়াখালীর সদর- মির্জাগঞ্জ আসনটি তার যোগ্য নেতৃত্বেই আমারা পেয়েছিলাম।
পটুয়াখালীর যোগাযোগ ব্যবস্থা তখন আজকের দিনের মত উন্নত ছিল না । দূর গ্রাম থেকে নদী পার হয়ে শহরে এসে হাবিব ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছে অথচ তাঁর চরপাড়ার বাসায় ভাত খেয়ে যায়নি, এমন ঘটনা আমাদের জানা নেই। নেতাকর্মীদের আপ্যায়ন থেকে শুরু করে দলের তরুণ কর্মীদের বিপেদ-আপদে সাথী ছিলেন সকলের প্রিয় ভাবী সামসুন্নাহার হাবিব।
স্বৈরাচার জিয়ার শাসনামল চলছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের উপর পুলিশের আক্রমণ। সকলে আশ্রয় নিল হাবিব ভাইয়ের বাসায়। পুলিশের পাশাপাশি গুন্ডাবাহিনীর চারিদিক থেকে আক্রমণ চলছে । লাইসেন্স করা বন্দুক নিয়ে গেটে দাঁড়িয়ে গেলেন ভাবী । হুঙ্কার দিয়ে বললেন, কাউকে গ্রেফতার করা চলবে না। তারপরও গ্রেফতার করা হয়েছিলো প্রায় পঞ্চাশ জন নেতাকর্মীকে। সেদিনের সেই সাহসী নারীকে এক সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখে কথাগুলো মনে পড়লো । শ্রদ্ধা ভাবীর প্রতি শ্রদ্ধা পটুয়াখালীবাসীর প্রিয়জন হাবিবুর রহমান মিয়ার প্রতি।’
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস